হোমশাশ্বত_বাণীবার্ধক্যে_সমস্যা

বার্ধক্যে_সমস্যা

বার্ধক্যে_সমস্যা

স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজজীর : এই বয়সে শরীর এক বড় সমস্যা। হাঁটুতে ব্যথা, অনিদ্রা, বিপি-সুগার-শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। এমন #বস্তুগত_সমস্যা’য় আপনি কি করেন? ডাক্তারের কথা শুনে চলেন। সঠিক কাজ। কেউ আবার এ নিয়ে হা-হুতাশ করেন, অন্যদের শোনান নিজের দুঃখের কথা।

ঠাকুর বলেছিলেন, বেশি পাপ-পাপ করলে মানুষ পাপীই হয়ে যায়। শারীরিক সমস্যায়ও এই কথা প্রাসঙ্গিক। মন যতই সমস্যা নিয়ে ভাববে ততই সমস্যা বাড়বে। কারণ কিছু নিয়ে ভাবলে ঐ প্রসঙ্গে সহায়ক চিন্তা (associated thoughts) উঠে আসতে থাকে আপনার মনে। তাই জোর দিন সমাধানে। অর্থাত কষ্ট হলে ওষুধ খান, ডাক্তারকে ফোন করুন।

অথবা অস্বস্তি থেকে মনকে সরিয়ে নিয়ে যান অন্যত্র। রাতে ঘুম হচ্ছেনা? কল্পনায় চলে যান ঠাকুরের কাছে দক্ষিণেশ্বরে। শীতের সকালে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে? অক্সিজেন-মাস্ক লাগিয়ে ঈজিচেয়ারে বসে ইউটিউবে গান শুনুন।
অন্যের কাছে নিজের কষ্টের কথা বেশি বললে লোক আপনাকে এড়িয়ে চলতে পারে। প্রত্যেক মানুষেরই এতো সমস্যা আছে নিজের যে সে তা নিয়েই ব্যস্ত!

এবার #মানসিক_সমস্যা। কর্মজীবনে আপনি বড় অফিসার ছিলেন কি মন্ত্রি বা অভিনেতা। গ্ল্যামার, ক্ষমতা, সম্পদ, জনপ্রিয়তা, অনেক কিছুই ছিল যা আজ আর নেই। এ নিয়ে দুঃখ করে লাভ কি? এবার বুঝেছেন ঠাকুরের কথার তাৎপর্য? বাইরের সম্পদের চেয়ে বেশি দামী ও প্রয়োজনীয় অন্তরের সম্পদ।
কিন্তু এখনো সময় আছে। এবার নজর দিন এদিকে। বাড়িয়ে তুলুন অন্তরসম্পদ — সমবেদনা, ত্যাগ, ভালবাসা, দয়া, নির্লোভ মানসিকতা। বাকী জীবনটা আনন্দে কাটবে। মানুষের দুঃখে এগিয়ে যান সাহায্য করতে।

নি:সঙ্গতা হলো #acute_problem এই বয়সে। কি করলে আপনার নি:সঙ্গতা দূর হবে, মানুষ আসবে আপনার কাছে? যখন তারা আনন্দ পাবে এসে।তাই নিজেকে আনন্দময় ব্যক্তিত্ব করে তুলুন। হাসি মুখে থাকা, আচরণে বিনয়ী, ব্যবহারে আন্তরিকতা, আপনাকে জনপ্রিয় করে তোলে।••• লোকেরা যদি অনুভব করে যে আপনার কাছে এসে তারা উপকৃত হবে, দূর হয়ে যাবে আপনার নি:সঙ্গতা। মানুষের কাছে নিয়ে যান ঠাকুরের কথা। প্রবীণ মানুষদের শেখান নতুনভাবে বাঁচতে। হাসি ফোটান তাদের মুখে।

এই বয়সে বিরাট সমস্যা হলো লক্ষ্যহীন জীবন।যেন সবকিছু শেষ হয়ে গেছে, এখন শুধু মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করে থাকা। #Emerging_problem এই বয়সে। আজ নয় তো কাল, অনেকেই মনে করেন।
অথচ সত্যটা একেবারেই বিপরীত। বার্ধক্য তো জীবনের শেষ নয়, নতুন জীবনের শুরু। আসুন, বাঁচুন নতুনভাবে। সমাজে, মানুষের কাছে আপনি আজও প্রয়োজনীয়। দেশ চায় আপনাকে। আপনার অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, সৃজনশিলতা দিয়ে আজো আপনি নতুন গতির সঞ্চার করতে পারেন সমাজে, মানুষকে পথ দেখতে পারেন।
বাইরে যেতে অসুবিধা হয়? তাতে কি? হাতেই তো আছে স্মার্টফোন। গড়ে তুলুন ফেসবুক-গ্রুপ, হোয়াটস’এপ গ্রুপ। ছাত্রদের জন্য কাউন্সেলিং, অভিভাবকদের জন্য parenting, কর্মপ্রার্থিদের জন্য তথ্যনির্দেশ, হতাশ মানুষদের motivate করা ••• অনেককিছুই করতে পারেন আপনি, নিজে বা অন্যদের সাথে মিলে।
মৃত্যুকে ভুলে যান। শুরু করুন নতুন জীবন।বাঁচুন প্রাণভরা উদ্যম নিয়ে।সমাজ চায় আপনাকে, দেশের কাছে আপনি এক অত্যাবশ্যক নাগরিক। #স্বামীজিরসৈনিককরেতুলুননিজেকে।

-স্বামী সোমেশ্বরানন্দ।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img