ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠা রোগীদের নিজেদের নতুন ক্যান্সার হাসপাতালে নিয়োগ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বাইপাস-সংলগ্ন মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। আপাতত ৩ জন ক্যান্সার-জয়ীকে নিয়োগ করা হয়েছে। এঁরা হলেন রিমা রায়, সুরজিৎ মৃধা এবং বিমল সাহা।
৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। তার প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এই উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সংবাদ মাধ্যমের সামনে তাঁদের হাজিরও করা হয়।
২০১৯-এ ৪৬ বছরের রিমাদেবীর স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে। ওই বছরের নভেম্বরে সৌরভ দত্তের অধীনে শুরু হয় তাঁর চিকিৎসা। বর্তমানে তিনি পুরোপুরি সুস্থ। তাঁকে নতুন ক্যান্সার ইউনিটের অপারেশন বিভাগে নিয়োগ করা হয়েছে।
৩৮ বছরের সুরজিতের পুরুষাঙ্গে ক্যান্সার ধরা পড়ে ২০১৮-র নভেম্বরে। ডিসেম্বরে তাঁর অপারেশন হয়। এরপর থেকে তিনি নিয়মিত চেক-আপে ছিলেন। এখন একেবারে সুস্থ। তাঁকে হাসপাতালের ক্যান্সার ইউনিটের হাউসকিপিংয়ের কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে।
৮ মাস ধরে ঘন ঘন জ্বর। নানা জায়গায় ঘোরাঘুরির পর অবশেষে ২০১১-এর অগাস্টে ৪৩ বছরের বিমল সাহার ক্যান্সার-রোগ চিহ্নিত হয়। তাঁকেও হাইসকিপিংয়ের কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে।
খুব শিগগিরই চালু হতে চলেছে মেডিকা ক্যান্সার হাসপাতাল। এখানে থাকছে রোবোটিক সার্জারি সহ ক্যান্সার চিকিৎসার অত্যাধুনিক সব ধরনের ব্যবস্থা। সেখানে এঁদের মতো ক্যান্সার থেকে সেরে আরও অনেককে নিয়োগ করা হবে এবং যোগ্যতা অনুযায়ী তাঁদের বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত করা হবে। যদি ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা কোনও চিকিৎসক বা নার্স এই হাসপাতালে কাজ করতে চান, তবে তাঁদের সরাসরি চিকিৎসার কাজে লাগানো হবে।
মেডিকা ক্যান্সার হাসপাতালের ডিরেক্টর সৌরভ দত্ত বলেন, “একজন ক্যান্সার রোগী যখন তাঁর চোখের সামনে একজন ক্যান্সার-জয়ীকে চিকিৎসা করতে দেখবেন, তখন তাঁর মনোবল অনেকটা বেড়ে যাবে, যা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পথে অনুঘটকের মতো কাজ করতে পারে।” তাঁর কথায়, ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
মেডিকা গ্রুপ অফ হসপিটালের চেয়ারম্যান অলোক রায় বলেন, “ক্যান্সার চিকিৎসায় আরও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন রয়েছে। রোগীর মানসিক উদ্বেগের দিকে লক্ষ্য রাখা, তাঁদের জীবনের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনা এবং আগের মতোই তাঁদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর ব্যাপারে সাহায্য করার প্রয়োজন রয়েছে।”