অষ্ট শম্ভুর (শিব) সাথে সাথে অষ্ট মহাবীর (হনুমান) পুরী ধাম রক্ষায় নিয়োজিত রয়েছেন। এই মহাবীররা হচ্ছেন, ১) সিদ্ধ মহাবীর ২) দরিয়া মহাবীর ৩) কানপাতা মহাবীর ৪) বর্গী হনুমান ৫) মসনী মহাবীর ৬) পঞ্চমুখী মহাবীর ৭) ফতে মহাবীর এবং ৮) শিরুলী মহাবীর।
মন্দিরের সুরক্ষার জন্য এর চারদিকে পাহারা দিচ্ছেন হনুমান। সিংহদ্বারে (জগন্নাথ মন্দিরের প্রধান প্রবেশ পথ, পূর্ব দ্বারে রয়েছেন ফতে হনুমান, পশ্চিম দ্বারে রয়েছেন বীর বিক্রম হনুমান, উত্তর দ্বারে রয়েছেন তপস্বী হনুমান এবং দক্ষিণ দ্বারে রয়েছেন কানপাতা হনুমান ও বড়ভাই হনুমান।
কানপাতা হনুমান: এই হনুমানের একটি সুন্দর কাহিনী রয়েছে। মহাসাগরের তীরে জগন্নাথ মন্দির অবস্থিত। সমুদ্র মন্থনের সময় লক্ষ্মীদেবী আবির্ভূত হন এবং ভগবান তাঁকে বিয়ে করেন। সাগর-কন্যাকে বিয়ে করার ফলে ভগবান সাগরের জামাতা হলেন, এবং মহাসাগর হলেন শ্রীজগন্নাথদেবের শ্বশুর।
রাতে মহাসাগরের তরঙ্গমালা একটি জোরালো শব্দ করে, যা গোটা পুরীতে শোনা যায়। একসময় এই তরঙ্গ-শব্দ শ্রীজগন্নাথদেবের মন্দিরে প্রবেশ করে এবং জগন্নাথের নিদ্রায় বিঘ্ন সৃষ্টি করে। শ্রীজগন্নাথদেব সমুদ্রকে আদেশ করেন, এমন কোনো শব্দ না করতে, যা তাঁর নিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। কিন্তু সমুদ্র তা শুনলো না। বরং তাঁর শব্দতরঙ্গ আরও বাড়িয়ে দিল। তখন জগন্নাথ হনুমানকে খবর দিল এবং বলল, সমুদ্রের শব্দ যাতে মন্দিরে না আসে, সেই ব্যবস্থা করতে। তখন হনুমান তার ডান কান পেতে সমস্ত শব্দ তরঙ্গ নিজের কানে ঢোকালেন। সেই থেকে তটভূমিতে সমুদ্রের তরঙ্গ-ভঙ্গের শব্দ আর কখনো জগন্নাথের মন্দিরে প্রবেশ করেনি।
শ্রীজগন্নাথ তাঁর ভক্ত হনুমানকে দক্ষিণ দ্বারে পাহারায় নিযুক্ত করে বলেন যে, সে যেন সবসময় সতর্কভাবে সমুদ্রের ধ্বনির দিকে মনোযোগ রাখে এবং কোনো শব্দ যেন মন্দিরে প্রবেশ না করতে পারে তা নিশ্চিত করে। “কানপাতা” শব্দের অর্থ কানকে শব্দ শ্রবণে নিরত থাকা। সেজন্য এই দ্বারে পাহারারত হনুমানকে বলা হয় কানপাতা হনুমান।