অমিত ধর
লাগামহীন প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন পরিবেশপ্রেমীরা। দূষণ প্রতিরোধে প্লাস্টিক বর্জ্যের পুনর্ব্যবহারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কলকাতার ক্যানেল ইস্ট আর ওয়েস্ট রোডে দু’ধারে খালপাড়ে প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক বেচাকেনা হয়। এইসব প্লাস্টিক রিসাইক্লিং বা পুনর্ব্যবহারের জন্য সংগ্রহ করে এনে এখানে জড় করা হয়।

এক সময় এখানে প্লাস্টিক কেনাবেচা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এখন আবার তা চালু হয়েছে। খালপাড়ের ধারে প্রতিদিন জমা করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক। তারপর সেগুলি পুনর্ব্যবহারের জন্য বিক্রি করা হচ্ছে। দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে প্লাস্টিকের যথেচ্ছ ব্যবহারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পরিবেশবিদরা। প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার দোকান, বাজারে অভিযান চালানো হলেও, কোনও ফল মেলেনি। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, প্লাস্টিকের থলের ব্যবহারের গড় সময় ২৫-৩০ মিনিট। কিন্তু সেই থলে নষ্ট হতে সময় লাগে প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ বছর।
প্লাস্টিক দূষণ রুখতে দিঘা এবং ধাপা সহ রাজ্য সরকার ৩০টি প্লাস্টিক প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে প্লাস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট।
পশ্চিমবঙ্গে বছরে প্রায় ৩,৩০,০০০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়, যা প্রশাসনের কাছে বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র কলকাতা পুর এলাকাতেই দৈনিক ৪০০ টনের মতো প্লাস্টিক বর্জ্য জমা হয়।
প্লাস্টিক দূষণের মোকাবিলায় ৫ বছর আগে মুম্বইয়ে চালু করা হয়েছিল দ্য মুম্বই প্লাস্টিক রিসাইক্লোথন প্রকল্প। এই উদ্যোগের নেপথ্যে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। প্রকল্পের ভাবনা অনুযায়ী, স্বেচ্ছাসেবকরা নাগরিকদের বাড়ির সবচেয়ে কাছের ড্রপ লোকেশন থেকে বিনামূল্যে প্লাস্টিক সংগ্রহ করেন এবং বেঞ্চ, পেন্সিল বাক্স, আবর্জনার পাত্র তৈরির কাজে তা পুনর্ব্যবহার করা হয়। লক্ষ লক্ষ নাগরিক এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।
ছবি: অমিত ধর