দেবব্রত বিশ্বাস স্মরণ কমিটি ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের স্মরণ কমিটির যৌথ আয়োজনে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ত্রিগুণা সেন সভাগৃহে গত ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল প্রাক্তন নগর পাল ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তুষার তালুকদারের স্মরণে একটি ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান। তুষার বাবু প্রশাসনিক জীবনের বাইরে ছিলেন অসম্ভব সাহিত্য, সঙ্গীত ও চিত্রকলার অনুরাগী। নিজে ছিলেন সুলেখক ও সুবক্তা। তাই তাঁরই স্মৃতিতে প্রকাশিত হলো বই ‘স্মরণ কথা’।
শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও প্রধান উদ্বোধক হিসেবে হাজির হয়েছিলেন তুষার তালুকদারের স্ত্রী সুষমা তালুকদার। ছেলে-মেয়ে সুতীর্থ ও তিথি থাকেন দেশের বাইরে। তাই তাঁরা এই বই প্রকাশ উপলক্ষে তাঁদের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছিলেন। বইটির প্রথমেই পারিবারিক স্মৃতিচারণ লিখেছেন পুত্র সুতীর্থ তালুকদার, কন্যা তিথি তালুকদার, জামাই জয়ন্ত চক্রবর্তী, পুত্রবধূ মালিনী তালুকদার, নাতি-নাতনীদের মধ্যে শাওন তালুকদার, জোশিকা চক্রবর্তী, তূর্য চক্রবর্তী ও শ্রেয়ান তালুকদার।
যে সব সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা লিখেছেন তাঁদের প্রিয় মানুষটির সম্পর্কে তার তালিকাও বেশ দীর্ঘ। ড. পবিত্র সরকার, দেবেশ রায়, গৌতম ঘোষ, পঙ্কজ সাহা, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, সঞ্জয় ঘোষ, স্বপন কুমার ঘোষ, শেখর তরফদার, তপন দাশ দেবপ্রসন্ন সিংহ, শান্তনু চট্টোপাধ্যায়, দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়, প্রবীর ব্রহ্মচারী, দেবাশিস বসু, রামকুমার মুখোপাধ্যায়, পল্লব মিত্র, ড. শক্তিকালী বসু, বিধানচন্দ্র পাল, অরিজিৎ মৈত্র, বরুণকান্তি চট্টোপাধ্যায়, অরুনকান্তি চট্টোপাধ্যায়, রমেন বসু, ড. সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, বসুপ্রাণ চট্টোপাধ্যায় ও সৌম্যেন অধিকারী।
প্রশাসনিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে লিখেছেন সন্ধি মুখোপাধ্যায়, তপন চট্টোপাধ্যায়, গৌতম মোহন চক্রবর্তী, ড. নজরুল ইসলাম, বি.ডি. শর্মা, সুখেন্দু হীরা ও তন্ময় চক্রবর্তী। বইটির সবশেষে রয়েছে তুষার তালুকদারের জীবনের উল্লেখযোগ্য একটি কাজ, রাহুল সাংকৃত্যানের দ্বিতীয় খন্ডের মুখপত্র। এছাড়া রয়েছে জগবন্ধু ইনস্টিটিউশনের প্রাক্তনী বার্তা পত্রিকায় প্রকাশিত একটি অনবদ্য সাক্ষাৎকার। ‘স্মরণ কথা’ বইটির সম্পাদনা করেছেন সৌম্যেন অধিকারী।
অনুষ্ঠানের সূচনা পর্বে ছিল সলিল চৌধুরীর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে সুরাঙ্গনের শিল্পীদের সমবেত কন্ঠে সঙ্গীতাঞ্জলি ‘আলোর পথযাত্রী’। পরিকল্পনা ও বিন্যাস কুমকুম ভট্টাচার্য, তথ্য ও গবেষণা ডা. সমীরকুমার গুপ্ত। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন সৌম্যেন অধিকারী। দ্বিতীয় পর্বে বই প্রকাশের পর শান্তিনিকেতন ও কলকাতার বিশিষ্ট শিল্পী সমন্বয়ে পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রনাথের স্বল্পশ্রুত গানের আসর। রবীন্দ্রনাথ ও সলিল চৌধুরী গানের অসম্ভব অনুরাগী ছিলেন তুষারবাবু। সেকথা ভেবেই এই অনুষ্ঠান এভাবে সাজানো হয়েছিল। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী তাপস চৌধুরী।