ফি বছর কলকাতার তাপমাত্রা যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন পরিবেশপ্রেমীরা। এ বছরের এপ্রিল মাসে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে একের পর এক রেকর্ড গড়েছে কলকাতা। পরিবেশবাদী সংগঠন Environment Governed Integrated Organisation (EnGio)-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১.৬ ডিগ্রি, যা গত ৭০ বছরের মধ্যে এপ্রিলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। ৩০ এপ্রিল এই মহানগরীর তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৭.৪ ডিগ্রি বেশি। ১৯৫৪ সালে এপ্রিলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছিল ৪৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে কলকাতা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে EnGio-র প্রতিষ্ঠাতা অধিকর্তা ও পরিবেশ সাংবাদিক জয়ন্ত বসু জানান, ১৯৫৮ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে কলকাতার গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে, ২০৮০ সালের মধ্যে কলকাতার গড় তাপমাত্রা ৪.৫ ডিগ্রি বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
ভারতের আবহাওয়া দফতরের দেওয়া তথ্যের উল্লেখ করে জয়ন্তবাবু আরও জানান, ভারতের জেলাগুলির মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। সুন্দরবন অঞ্চলে মারাত্মক পর্যায়ের ঘূর্ণিঝড়ের বাড়তে পারে, যার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কলকাতা সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
শতাব্দীর শেষদিকে সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে জলের উচ্চতা ০.৬ মিটার বাড়তে পারে, যা ১৯৯৫-২০১৪ সালের তুলনায় ৬ গুণ বেশি। এর পরিণতি হিসেবে ঘূর্ণিঝড়, বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেবে, যার প্রভাব পড়বে কলকাতায়। জয়ন্তবাবু বলেন, ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে সুন্দরবনকে বাঁচাতে বিশেষ পরিকল্পনা হাতে নিতে চলেছে Engio।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র, কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার, কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর্ ও সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক প্রমুখ।