বাংলা বিনোদন জগতে ফের দুঃসংবাদ। রবিবার সকালে চলে গেলেন অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়। আজ সকাল ১০টা নাগাদ কসবার বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত বেশ কয়েক মাস ধরে তিনি পুরোপুরি শয্যাশায়ী ছিলেন।
মঞ্চ থেকে সিনেমার পর্দা, জীবনের শেষবেলা পর্যন্ত কাজ করে গিয়েছেন এই অভিনেতা। ১৯৩০ সালে কলকাতায় তাঁর জন্ম। বাবা অমরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ও ছিলেন থিয়েটার জগতের লোক। মনুবাবুর আসল নাম সৌরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। কিন্তু ডাক নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন তিনি। ১৯৫৭ সালে বিশ্বরূপায় যোগ দিয়েছিলেন একজন প্রম্পটার হিসেবে।
‘ক্ষুধা’ নাটকে কালী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবর্ত হিসেবে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। এরপর তাঁকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রথম ছবি ১৯৫৯ সালে। মৃণাল সেনের ‘নীল আকাশের নীচে’।
তবে অভিনয় জীবনে বড় বাঁক এল সত্যজিৎ রায়ের ছবির হাত ধরে। মিনার্ভা থিয়েটারে নাটকের মহড়া চলছে। ল্যান্ডলাইনে একটি ফোন এল। সত্যজিৎ রায় তাঁকে দেখা করতে বলেছেন। ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ ছবিতে ভন্ড সাধু ‘মছলিবাবা’র চরিত্রে তাঁর অভিনয় তাঁকে বিপুল জনপ্রিয়তা এনে দেয়।
২০০৩-এ পরিচালক অভিজিৎ চৌধুরীর পাতালঘর ছবিতেও তাঁর অভিনয় বিশেষ দাগ কেটেছিল।
তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবিগুলি হল, ‘গণদেবতা’, ‘মৃগয়া’, ‘অশনি সংকেত’, ‘শ্বেত পাথরের থালা’, ‘বাকিটা ব্যক্তিগত’ প্রভৃতি।
তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইট করে তিনি বলেছেন, “থিয়েটার ও সিনেমার জগতের বর্ষীয়ান অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে আমি শোকাহত। ২০১৫ সালে টেলি সম্মান পুরস্কার অনুষ্ঠানে ‘লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ দিয়ে তাঁকে সম্মানিত করা হয়েছিল। তাঁর পরিবার, সহকর্মী ও অনুরাগীদের সমবেদনা জানাই।”