নীলার্ণব চক্রবর্তী
অলোকসামান্য দিন তবে এল
পরিতাপ তুমি ভূমিতলে ছড়িয়ে পড়ে আছ কেন?
এসো তবে গায়ে, অলঙ্কার হও, তোমার কি আমায় রূপকল্প করবার নেই কোনও দায়?
ঘরে এসো, যেখানে পুস্তকগুলি থাকে সেইখানে পিঁড়ি পেতে পরিতাপ বোসো..
আমি তোমার উৎপত্তি জানি তো— শরীর তাপ পেতে পেতে মল উদ্বায়ী হয়েছিল,
হারিয়ে গিয়েছিল মহাকাশে, ব্ল্যাকহোল তারে খেয়েছিল কি তারপর… মনে হয় তা-ই…
তারপর এক প্রতিক্রিয়ায় পরি ও তাপ জুড়ে গিয়ে— আজ তুমি হলে…
তুমি এসো, পরিতাপ, আমার এ শিশ্নে তা হলে
গাছেদের ভাষা
নীলার্ণব চক্রবর্তী
সেই দিন রাত্রে গাছেরা সহর্ষে কথা বলে গেল
তার নীচে রমণীর মতো এক মেয়ে বসে বসে সেই কথাগুলি রেকর্ড করে ফেলেছিল,
গাছেরা কী বলল?
রমণীকে বার বার তা জিজ্ঞাসা করলেও উত্তর মেলেনি
বৃক্ষনীচ থেকে সরানোও সম্ভব হয়নি কারও পক্ষে ওই মেয়েটিকে,
এক সুতোও না
রেকর্ড শুধু বাড়ছিল তার, গাছেদের কথা, হাসি, গান…
ছিল হম্বিতম্বিও তাতে—
মেয়েটি আস্তে আস্তে গাছেদের ভাষা শিখে ফেলছিল
তারপর গাছেদের সঙ্গে কথা বলতে শুরুও করে দিল সে
জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে লাগল টারজানের মেয়ে সংস্করণ হয়ে,
ওই পুরাতন টারজানসুলভ মোটেই নেংটি পরা নয়,
তার গায়ে পোশাক ছিল ব্র্যান্ডেড, গড়িয়াহাট থেকে কেনা–
বৃক্ষ এলাকা থেকে ফিরে তারপর একদিন গাছের ভাষায় সে লিখতে শুরু করল উপন্যাস এক প্রকাশক পেয়ে গেল উপন্যাসটি শেষ হতে না হতেই,
মসিহার মতো ভাগ্য নিশ্চয়ই তার
নোবেল কমিটিতে সেই লেখা চলে গেল, মানে তার ইংরাজি
অনুবাদ, অনেক আলোচনা-টোনা শেষে সকলেই স্থির করে ফেলল যে মেয়েটিকে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হবে, এত ভাল লেখা—
গাছের ভাষায় লেখালিখির জন্য সেই বার থেকে নোবেল দেওয়া শুরু হয়ে গেল,
আস্তে আস্তে মানুষের মধ্যেও জনপ্রিয় সেই ভাষা,
গাছেদের ভাষায় সহজপাঠ লিখল প্রথম— মেয়েটিই তো—
সেই সহজপাঠ আমার হাতের পাশে আজ এই ভোরবেলা খোলা পড়ে আছে
রূপ ও ভ্রম
নীলার্ণব চক্রবর্তী
প্রেমিকের জন্য তোমার হাতের মুঠো খুলে দাও সখি
নাড়াও তোমার চুড়িগুলি, শব্দ তোলো রিনরিন, ঠিনঠিন করে…
শব্দগুলো ঘরে সিগারেটের গোল গোল ধোঁয়া হয়ে ওড়ে
প্রেমিকের চোখে ওই ধোঁয়া আরাম-সুলভ হয়, তুলে নেয় তাকে
পাহাড়ের কোলে
নীচ থেকে তুমি তাকে ডাকো– শোনো… শুনতে পাচ্ছ… অ্যাই… শোনো…
বাড়ি যেতে হবে…
সে উপর থেকে ঝাঁপ দেয় নীচে, তলদেশে এসে পড়ে কণা কণা রূপ,
দলা দলা ভ্রম…