আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় রাজ্য সরকারের ভূমিকার প্রতিবাদ জানিয়ে বহু পুজো কমিটি অনুদান প্রত্যাখ্যানের কথা জানিয়ে দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে সোমবার নবান্নে এক প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যে সব পুজো কমিটি সরকারি অনুদান নেবে না, তাদের বদলে নতুন পুজো কমিটিকে সেই অনুদান দেওয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পুজোর অনুদান চেয়ে আমাদের কাছে এ বার অতিরিক্ত কিছু আবেদন এসেছে। যদি কেউ না নিতে চান, ঠিক আছে। নতুন যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের দিয়ে দেবেন। নতুন অনেকের আবেদন আমাদের কাছে এসে পড়ে আছে।” তিনি আরও বলেন, “সবাইকে হয়তো সাহায্য করতে পারব না। কারণ টাকাটা অনেক বেড়ে গিয়েছে। ক্লাবগুলিকে দেওয়ার জন্য ৪৫০ কোটি টাকা খরচ হয়।” মঙ্গলবার থেকে দেওয়া শুরু হবে বলে জানান মমতা।
এ বছর পুজো অনুদান না নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে নেতাজি নগর বাস্তুহারা সমিতি, বেহালার সবেদা বাগান ক্লাব। কলকাতার মুদিয়ালি আমরা কজন পুজো কমিটি এবং হুগলি ও পূর্ব বর্ধমান জেলার কয়েকটি পুজো কমিটিও সরকারি অনুদান না নেওয়ার কথা জানিয়েছে। তবে বাদল পল্লি মহিলা দুর্গোৎসব কমিটি, বাঁশদ্রোণী কালীতলা পার্ক নাগরিক সেবা সমিতি এবং নিবেদিতা পার্ক অ্যাসোসিয়েশন আবার সরকারি অনুদান পেতে নতুন করে আবেদন জানিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই তিন পুজো কমিটি পুজোর অনুদান দেওয়া হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা প্রশাসনের কর্তাদের বলেন, “পুজো আসছে, অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে দেখে নিতে হবে। পুজো কমিটিগুলোর যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক ডিএম, এসপি এলাকা পরিদর্শন করুন। কার কী সমস্যা রয়েছে, দেখুন।”
তাঁর কথায়, “পুলিশি অ্যাকশন এখন থেকেই শুরু করতে হবে। পুজোর সময় যাতে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা না ঘটে, তা দেখতে হবে। পছন্দমতো থিম করার অধিকার সবার রয়েছে, তবে, আমরা এমন কিছু করব না, যাতে দুর্ঘটনা ঘটে।”
তিনি আরও বলেন, “এই পুজোকে কেন্দ্র করে অনেকের রুজিরোজগার হয়। অনেক বিদেশি অতিথি আসেন। সারা দেশ থেকে মানুষ আসেন। তাঁদের যাতে কোনওরকম অসুবিধা না হয়, সেটাও দেখতে হবে।”
ভাঙাচোরা রাস্তা দ্রুত মেরামত করতে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেই কাজ না হলে যে আগামী দিনে উন্নয়নমূলক কাজের অর্থ রাজ্য সরকার আর বরাদ্দ করবে না, তা-ও হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন মমতা।