হোমPlot1কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই রবীন্দ্র সরোবরে জলে ডুবে কিশোরের মৃত্যু

কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই রবীন্দ্র সরোবরে জলে ডুবে কিশোরের মৃত্যু

কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই রবীন্দ্র সরোবরে জলে ডুবে কিশোরের মৃত্যু

এস এম ঘোষ, পরিবেশবিদ
রবীন্দ্র সরোবরে এক কিশোরের জলে ডুবে মৃত‍্যুর খবরটা পড়লাম। এখন অন্ততঃ কর্তৃপক্ষের নড়েচড়ে বসার সময় হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে আর এই ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে। এখানে কোনওরকম বিধিনিষেধ মানার ব্যবস্থা নেই।

এই সরোবরের  সুইমিং পুলের সংস্কার না করলে, এই রকম দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে। এক্ষেত্রে আমার কয়েকটি প্রস্তাব রয়েছে:
১) বর্তমানে রবীন্দ্র সরোবরে কোন লাইফ সেভার  নেই। অবিলম্বে এই সরোবরে লাইফ সেভার নিয়োগ করতে হবে।
২)  দীর্ঘকাল ধরে এই সরোবরের কোনও সংস্কার হয় না। তাই দ্রুত সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া উচিত। 
৩) যে কেউ এসে সরোবরের জলে নামতে পারবে না। জলে নামার জন‍্য অতি আবশ‍্যিক কিছু নিয়মাবলী পালন করতে হবে। যাঁরা জলে সাঁতার কাটতে নামবেন, তাঁদের রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন। তা না হলে যে কেউ জলে নেমে যাবেন এবং দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে না।
৪) নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে এবং ঢোকার ক্ষেত্রে নিরাপত্তারক্ষীদের কড়াকড়ি করতে হবে। 
৫) ক্লাবগুলিকেও তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। জলাশয়ের নিকটবর্তী অংশ পরিষ্কার রাখতে হবে এবং জলাশয়ে কোনও আবর্জনা ফেলা যাবে না।
৬) আমরা যাঁরা রবীন্দ্র সরোবর পাবলিক সুইমিং পুলে নিয়মিত সাঁতার কাটি, তাঁরা জল পরিষ্কার রাখার যথাসম্ভব চেষ্টা করি, যাতে জলাশয়ে ঝাঁঝি এবং কচুরিপানা জমতে না পারে। এই বিষয় নিয়ে আমরা অনেকদিন ধরেই কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে আসছি। অনেকবার আমরা রবীন্দ্র সরোবর পুলের জলের গুণগত মান নিয়েও কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ পেশ করেছি।


KMDA-এর মৌখিক সুপারিশ মেনে আমরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিভাগ থেকে সরোবরের জলের pH, মোট দ্রাব‍্য পদার্থ এবং ই-কলিফর্ম পরীক্ষা করতে পাঠাই। এই পরীক্ষার ফলাফল থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, জল কতটা স্নানের পক্ষে অনুপযুক্ত। এর ফলে যাঁরা নিয়মিত সাঁতার কাটেন, তাঁরা চর্মরোগ, চোখের অসুখ , এমনকি সেলুলাইটিসে পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন। জলে pH এর মান ৮.২২। অর্থাৎ জল মাত্রাতিরিক্ত ক্ষারীয়। সাধারণত pH এর মাণ ৭.৪ থেকে ৭.৮ পর্যন্ত থাকে। Total Dissolved Solid (TDS) বা মোট দ্রাব‍্য পদার্থের পরিমাণ প্রতি লিটার জলে ২৩৫ মিলিগ্রাম বা ২৩৫ পার্টস পার মিলিয়ন (ppm)। সাঁতার কাটার জলে মোট দ্রাব‍্য পদার্থের পরিমাণ ৮০ থেকে ১২০ ppm এর বেশি থাকা উচিৎ নয়।

এর ফলে এই জলে নানা রকমের রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। পুলের জলে ক্লোরিনের মাত্রা কম হওয়ায় নানারকমের জীবাণুর প্রভাবে জল দূষিত হচ্ছে। এর পরেও কর্তৃপক্ষ তেমনভাবে জল পরিষোধনের কাজ করেনি । জল দূষণ ক্রমে বেড়ে চলেছে।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img