আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য। আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর রবিবার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠকে। আন্দোলনকারীরা হাসপাতালের অধ্যক্ষেরও অপসারণ চাইছেন। কিন্তু হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এখনও পদে বহাল থাকায় বিভিন্ন মহলে বিস্ময় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতি সহ নানা ধরনের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোন খুঁটির জোরে তিনি স্বপদে রয়ে গেলেন, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
গত বছরের তাঁকে আর জি করের অধ্যক্ষ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নোটিস জারি করা হয়। সাধারণ মানুষের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা, চুক্তির ভিত্তিক কর্মী নিয়োগ, ক্যান্টিন, সুলভ শৌচালয়, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে টিফিনের বরাত – দুর্নীতির একগুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
কমিশন প্রথায় সন্দীপ লাভবান হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন আর জি করের প্রাক্তন নন-মেডিক্যাল ডেপুটি সুপার আখতার আলি। টাকা নিয়ে বদলিরও অভিযোগ রয়েছে। বিতর্কের জল ভিজিল্যান্স পর্যন্ত গড়িয়েছিল। তারপরেই স্বাস্থ্যভবন থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক পদে বদলি করা হয় তাঁকে।
১১ সেপ্টেম্বর যে বদলির নির্দেশ জারি করা হয়েছিল, তা পাল্টে যায় ৯ অক্টোবরেই। সন্দীপ আবার ফিরে আসেন আরজি করে। ঘটনার পর তিনি বলেছিলেন, মৃত ছাত্রীটির রাতে একা সেমিনার হলে ঘুমানো বা থাকা উচিত হয়নি।
এই বিতর্কের মধ্যেই আর জি কর নিয়ে একটি ভয়েস রেকর্ডিং খতিয়ে দেখার তদন্তকারীদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। টুইটে কুণাল লিখেছেন, “পুলিশ দক্ষতার সঙ্গে তদন্ত করছে, ইতিমধ্যেই গ্রেফতার একজন। মুখ্যমন্ত্রী যথাযথভাবে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। অভিষেকও কঠোর। তদন্তকারীদের কাছে অনুরোধ, একটি ফোন ভয়েস রেকর্ডিং-এ ইঙ্গিতপূর্ণ কথা শোনা যাচ্ছে। কারা জড়িত, স্পষ্ট ইঙ্গিত। সত্যাসত্য জানি না। অনুসন্ধান জরুরি।”
অন্যদিকে, আরজিকর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ ডঃ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা খতিয়ে দেখা উচিত বলে টুইটে দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ছাত্রীকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় আদালতের নজরদারিতে সিবিআই তদন্তের দাবিও জানিয়েছেেন বিরোধী দলনেতা।
শুভেন্দু টুইটে লিখেছেন, আরজি করের অধ্যক্ষ ডঃ সন্দীপ ঘোষকে দুবার সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবু তার এমনই প্রভাব যে তাঁকে অপসারণের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই নির্দেশ বাতিল করা হয়েছিল এবং আরেকবার তাঁকে অপসারণ করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে বদলি করার পরেও আরজি করে ফেরানো হয়েছে।”