বিশেষ প্রতিনিধি : করোনার আতঙ্কে শান্তিনিকেতনে এবারের বসন্তোৎসব বাতিল হয়ে যাওয়ায় অনেকেই আক্ষেপ করছেন। রবীন্দ্রভারতীতে বসন্তোৎসবে ছাত্রীদের পিঠে ‘অশ্লীল’ শব্দ লেখা নিয়ে রাজ্যজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। এরই মাঝে রবিবাসরীয় সকালে এক রঙিন, বর্ণাঢ্য অথচ সুশৃঙ্খল দোল-উৎসবের সাক্ষী হয়ে রইলেন মধ্যমগ্রামের মানুষ।
সকাল ৮টা নাগাদ মধ্যমগ্রাম চৌমাথার সুভাষ ময়দান থেকে শুরু হয় পদযাত্রা। তাতে পা মিলিয়েছিলেন এলাকার মানুষ। ছিলেন মধ্যমগ্রামের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। ছিল স্কুল পড়ুয়ারাও। কবিগুরুর গান আর বিভিন্ন নৃত্য সংস্থার নাচ নজর কেড়ে নেয় পথচলতি মানুষের।
গত কয়েকদিন ধরে প্রকৃতির খামখেয়ালীপনায় কিছুটা চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল উদ্যোক্তাদের কপালে। ভোরের আলো ফোটার মুখে আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামতেই সেই উদ্বেগ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তবে তাতে ছন্দপতন হয়নি। কিছুক্ষণের মধ্যে বৃষ্টি থেমে রোদ উঠতেই ভিড় বাড়তে থাকে অংশগ্রহণকারীদের। রবিবার ছিল আন্তর্জাতিক নারী দিবস। তারই যেন সার্থক রূপ দেখা গেল মাস-এর বসন্তোৎসবে। কারণ, যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে মহিলারাই ছিলেন সংখ্যায় অনেক ভারী। বয়সের বাধা ঠেলে এসেছিলেন প্রবীণারাও।
চৌমাথা থেকে সোদপুর রোড হয়ে শোভাযাত্রা যখন মধ্যমগ্রাম রেল ময়দানে পৌঁছয়, তখন থিকথিকে ভিড়। কেউ গাইছেন রবীন্দ্রনাথ, আবার কেউ কেউ নাচছেন গানের তালে তালে। বোঝা গেল, দোল হোক বা অন্য যে কোনও উৎসব, বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণে আজও বড় অবলম্বন রবীন্দ্রনাথ। তাঁকে ছাড়া আমরা যে এক পা-ও এগোতে পারি না, এ যেন তারই বার্তা।
মাস-এর সম্পাদক অনির্বাণ চৌধুরীর জানালেন, গত আট বছর ধরে তাঁরা এই বসন্তোৎসব করে আসছেন। প্রতি বছরই এতে মানুষ যেভাবে সাড়া দিচ্ছেন, তাতে তাঁরা অনুপ্রাণিত।