সুচিক্কণ দাস: চীনের প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের উৎস কি প্যাঙ্গোলিন? সম্প্রতি তেমনই সন্দেহ করছেন চীনের গবেষকেরা। তাঁদের সন্দেহ, এই ভাইরাস বাদুড় থেকে মানুষের দেহে ছড়িয়েছে বেআইনি প্যাঙ্গোলিন পাচারের সূত্রে। দুনিয়ার প্রাণিকূলের মধ্যে সারা গায়ে আঁশ রয়েছে একমাত্র প্যাঙ্গোলিনেরই। এশিয়ার কিছু অংশে প্যাঙ্গোলিনের মাংস খুবই প্রিয়। গায়ের আঁশ ব্যবহার করা হয় ওষুধ হিসাবে। এশিয়াতে যত বন্যপ্রাণ গোপনে পাচার করা হয়, তাদের অন্যতম প্যাঙ্গোলিন। তবে প্যাঙ্গোলিন সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক আইন রয়েছে। চীনের মতো দেশে প্যাঙ্গোলিনের মাংস রীতিমতো তারিয়ে তারিয়ে খাওয়া হয়। তাছাড়া সাবেকি ওষুধ হিসাবেও ব্যবহার করা হয় প্যাঙ্গোলিনের আঁশ। জানিেয়েছে ওয়ার্লড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ড।
সাউথ চায়না এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি করোনা ভাইরাস নিয়ে গবেষণার দায়িত্বে রযেছে। তাদের বিবৃতি, ‘করোনা ভাইরাস নিয়ে সর্বশেষ যে আবিষ্কার, সেটা এই রোগের নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগবে।’ এ পর্যন্ত মূল চীনা ভূখণ্ডে এই রোগে ৬৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকেই এই রোগের উৎপত্তি। উহানের বাজারেই বিক্রি হত জীবন্ত বন্যপ্রাণ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথমে এই ভাইরাসের জন্ম হয় বাদুড়ের দেহে। এরপর অন্য কোনও প্রাণীর মাধ্যমে তা ছড়ায় মানুষের দেহে।
প্যাঙ্গোলিনের দেহ থেকে নেওয়া করোনা ভাইরাসের জিনের পরম্পরা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ওই জিন পরম্পরার সঙ্গে এই রোগে আক্রান্তদের দেহে পাওয়া করোনাভাইরাসের জিন পরম্পরার ৯৯ শতাংশ মিল রয়েছে। চীনের সরকারি সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া জানাচ্ছে, ‘বাদুড় ও মানুষের মাঝে থাকা সবচেয়ে সম্ভাব্য বাহক হল প্যাঙ্গোলিন’। তবে হংকং সিটি ইউনিভার্সিটির ভেটেরিনারি মেডিসিনের অধ্যাপক ডির্ক পেইফার সতর্ক করে দিয়েছেন যে, প্যাঙ্গোলিনের মাধ্যমেই যে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে , তা প্রমাণ করতে আরও দীর্ঘ সময় ধরে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাতে হবে। তিনি বলেন, ‘প্রথমে করোনাভাইরাসের প্রতিনিধিত্বমূলক নমুনা যোগাড় করতে হবে। এটা সংগ্রহ করতে হবে বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর দেহ থেকে। এরপর সেগুলি পরস্পরের সঙ্গে তুলনা করে দেখার পরই এ বিষয়ে আরও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যাবে। তাছাড়া, খাদ্যদ্রব্যের বাজার থেকেই মানুষের দেহে এই জীবাণু প্রবেশ করেছে, সেটাও আলাদা করে প্রমাণ করার দরকার রয়েছে। ’
(সূত্র: দ্য আসাহি শিনবুন)