বিশেষ প্রতিনিধি, কলকাতা : তিনি বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সেই অবিসংবাদিত নেতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ বছর শততম জন্মবার্ষিকী। মঙ্গলবার নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে দিনটি উদযাপন করল কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস। সেইসঙ্গে পালন করা হল সেদেশের জাতীয় শিশু দিবসও।
সকালে উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান। বঙ্গবন্ধুর ছাত্র জীবনের স্মৃতি-বিজড়িত ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ)-এর বেকার হস্টেলের ২৪ নম্বর ঘরে তাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
বিকেলে উপ-দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন ও টেরাকোটা ম্যুরাল উদ্বোধন করা হয়। এরপর এক আলোচনা সভায় বিশিষ্ট সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন,’বাঙালি স্বভাব ভীরু জাতি হলেও, বঙ্গবন্ধু ছিলেন ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব। তাঁর কণ্ঠস্বর ছিল সিংহনাদের গর্জনের মত,যা শুনে গায়ে কাঁটা দিত। তিনি ছিলেন ভীরু বাঙালির ভিড়ে মাথা উঁচু করে থাকা এক অনন্য পুরুষ।’
স্মৃতিচারণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘১৯৭২ সালে কলকাতায় বঙ্গবন্ধু ভাষণ দেওয়ার সময় প্রথমে হিন্দিতে বলতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরে ইন্দিরা গান্ধীর পরামর্শে বাংলায় বক্তৃতা দেন। শেখ মুজিবুর রহমান একটি নাম নয়, একটি ইতিহাস। ভৌগোলিক দিক থেকে দুই দেশ আলাদা হলেও, আত্মিকভাবে ভারত ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা।’
বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানা দিক নিয়ে বক্তব্য রাখেন ডেপুটি হাই কমিশনার তৌফিক হাসান।
বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশই একমাত্র দেশ, যেখানে দেশের মাতৃভাষা থেকে স্বাধীনতা, সবকিছুই আন্দোলন করে অর্জন করতে হয়েছে। এর একমাত্র নায়ক হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কোনও সামরিক বা রাজনৈতিক শক্তি কখনও তাঁকে দমাতে পারেনি।’ পরে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট শিল্পী অঞ্জন দত্ত। এছাড়া, শিশু-কিশোর এবং কলকাতায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।