বিশেষ প্রতিনিধি : পরিযায়ী শ্রমিক এবং ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বিজেপি মিথ্যা প্রচার চালিয়ে মানুষকে বিভ্রান্তির পথে ঠেলে দিচ্ছে। এই অভিযোগ করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন বিদ্যুৎ মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। সেইসঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলে তিনি নিশানা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও।
রাজ্যসভার প্রাক্তন এই সাংসদের অভিযোগ, বাংলাকে অর্থসাহায্য দেওয়ার যে দাবি অমিত শাহ করেছেন, তা সর্বৈব মিথ্যা। তাঁর কথায়,”কেন্দ্রের কাছে এখনও রাজ্যের ৬০ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে কেন্দ্র কোনও উচ্চবাচ্যই করছে না। অন্যদিকে, ২০ লক্ষ কোটির প্যাকেজ ঘোষণার নামে দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করে চলেছে কেন্দ্র।”
তিনি বলেন,”দেশের গরিব শ্রেণির মানুষ এখন চরম আর্থিক সঙ্কটের শিকার। এই অবস্থায় দরকার ছিল নগদ অর্থের জোগান, অর্থাৎ মানুষের হাতে নগদ টাকা তুলে দেওয়া। কিন্তু কেন্দ্র সে পথে হাঁটেনি।”
এ প্রসঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া প্রস্তাবের কথাও উল্লেখ করেন। মণীশবাবু বলেন,”মুখ্যমন্ত্রী এককালীন ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু কেন্দ্র তাতে কান দেয়নি।” পিএম কেয়ার্স ফান্ডের বিপুল পরিমাণ টাকা কোথায় গেল, সে প্রশ্নও তুলেছেন রাজ্যের প্রাক্তন এই দুঁদে আমলা।
পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানো নিয়েও কেন্দ্রের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছেন মণীশবাবু। তিনি বলেন, রাজ্যের বদনাম করার জন্য কেন্দ্র কুৎসিত রাজনীতির আশ্রয় নিয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর দায়িত্ব কার, এই প্রশ্নও তোলেন তিনি। তাঁর মতে,”কেন্দ্রের উচিত ছিল, পরিকল্পনা করে ভিনরাজ্য থেকে বাংলার শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনা। কিন্তু তা না করে হঠাৎই একের পর এক ট্রেন রাজ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হল। এতে করোনা সংক্রমণের বিপদ বেড়েছে। রাজ্যকে বিপাকে ফেলার জন্যই ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করা হয়েছে।”
একদিকে করোনার প্রকোপ, অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই যেভাবে স্পেশাল ট্রেনে যেভাবে গাদাগাদি করে শ্রমিকদের রাজ্যে নিয়ে আসা হল, তার পিছনে কেন্দ্রের দুরভিসন্ধি কাজ করেছে বলে মনে করেন তিনি।
মণীশবাবু বলেন, কেন্দ্র শুরু থেকে ধাপে ধাপে শ্রমিকদের ফেরোনোর ব্যবস্থা করলে আজ এই পরিস্থিতি তৈরি হত না।
এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতির মোকাবিলায় রাজ্য সরকার যেভাবে কাজ করেছে, তার প্রশংসা করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব। তাঁর কথায়,”কেন্দ্রের উচিত ছিল, এই সময় রাজ্যের পাশে থাকা। রাজ্যের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করা। কিন্তু তা না করে এখন ভোটের রাজনীতির খেলায় নেমেছে অমিত শাহের দল।”