পুলক মিত্র : করোনার ধাক্কা সামলে কর্মসংস্থান বাড়ানোই তাঁর কাছে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। kolkatanewstoday-কে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে একথা জানিয়েছেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ (Chandranath Sinha)। দফতরের দায়িত্ব নিয়েছেন এখনও ৪ মাস পেরোয়নি। এর মধ্যেই কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন চন্দ্রনাথবাবু। বর্তমানে রাজ্যে ৮৯ লক্ষ ক্ষুদ্র শিল্প ইউনিট রয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন দেড় কোটি মানুষ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বরাবরই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে কর্মসংস্থানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ভাবনাকে সামনে রেখেই তাঁর দফতরের কাজকে এগিয়ে নিতে যেতে চান চন্দ্রনাথ।
করোনার জেরে শিল্প ক্ষেত্রে মন্দা নেমে এসেছে। ছোট, বড়, মাঝারি, সব শিল্পেই এর প্রভাব পড়েছে। ব্যতিক্রম নয় এই রাজ্যের ক্ষুদ্র শিল্পও। তবে সেই ক্ষতির ধাক্কা সামলে এখন ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে ক্ষুদ্র শিল্প। এমনটাই দাবি রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রীর। মন্ত্রী জানান, “করোনাকালে পিপিই, মাস্ক, স্যানিটাইজার, গ্লাভস প্রভৃতির চাহিদা তৈরি হয়েছে। তাই ক্ষুদ্র শিল্প সংস্থাগুলি এই সব সামগ্রী উৎপাদনের ওপর দিচ্ছে।”
তাঁর কথায়,”কৃষির পরেই সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হতে পারে ক্ষুদ্র শিল্পে। তাই কৃষিভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ওপর বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। কর্মতীর্থ প্রকল্পের অধীনে আরবান হাট, রুরাল হাট, তাঁতের হাট, মসলিন তীর্থ গড়ে তোলার কাজ চলছে।”
বোলপুর বিধানসভার ৩ বারের তৃণমূল বিধায়ক চন্দ্রনাথবাবু প্রথমে ছিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী। এরপর তাঁকে পরিকল্পনা রূপায়ণ ও পরিসংখ্যান দফতরের মন্ত্রী করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে সামলেছেন মৎস্য মন্ত্রীর দায়িত্বও। তৃতীয় তৃণমূল সরকারের মন্ত্রিসভায় ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প দফতরের পাশাপাশি বস্ত্র দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন বীরভূমের এই ভূমিপুত্র।
হস্ত ও কুটির শিল্পে শান্তিনিকেতনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত এখানকার প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ। দফতরের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বোলপুরে একটি আন্তর্জাতিক মানের বাজার তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চন্দ্রনাথ। এছাড়া এখানে আদিবাসী হস্তশিল্পের একটি বাজার তৈরিরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য জমি চিহ্নিত করার কাজও শেষ হয়েছে।
শ্রীনিকেতন শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের এলাকা বাড়াতে চান চন্দ্রনাথবাবু। এই পর্ষদের আওতায় বোলপুর পৌরসভাকে আনতে চান তিনি। এই ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমত রাজ্য সরকারের একটি রিপোর্টও জমা দেওয়া হয়েছে। সরকারের সবুজ সঙ্কেত পেলেই শ্রীনিকেতন শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের এলাকা বাড়ানো হবে, জানিয়েছেন চন্দ্রনাথ সিংহ। এর ফলে মানুষের কাছে আরও উন্নয়ন পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রী।