নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে এখন সমাজের নানা স্তরে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। একটু ভিন্ন ভাবনায় নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছেন পায়েল সেনগুপ্ত। পায়েল আদতে বাংলার মেয়ে। তবে কর্মসূত্রে গত বেশ কয়েক বছর ধরে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা।
এক সময় মিডিয়া জগতের যুক্ত ছিলেন। শুধুমাত্র সাংবাদিকতা নয়, করেছেন মার্কেটিংয়ের কাজও। জীবনের নানা বাঁকে বারেবারে পেশা বদলেছেন পায়েল। এখন নিজেকে পুরোপুরি নিয়োজিত করেছেন নারীর ক্ষমতায়নের কাজে। বেঙ্গালুরুর বুকে গড়ে তুলেছেন “Our Parampara” অর্থাৎ “আমাদের পরম্পরা” নামে একটি সংস্থা।
কী কাজ করবে এই সংস্থা। জবাবে পায়েল জানালেন, “মূল লক্ষ্য নারীর ক্ষমতায়ন। ডিভোর্সি, বিধবা, বা যাঁদের সন্তানরা দেখে না, কিংবা, একসময় যাঁরা নানা পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, কিন্তু বয়সজনিত কারণে এখন যাঁদের আয়ের কোনও সংস্থান নেই, এমন মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলা।”
বাংলা, বিহার, ওড়িশা, আসাম ও বেনারসের শিল্পীদের থেকে শাড়ি সংগ্রহ করে সেগুলি তাঁর সংস্থার মাধ্যমে দেশের নানা প্রান্তের ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেবে তাঁর সংস্থা, জানালেন পায়েল। তিনি আরও বললেন, কোভিডের সময় বহু শাড়ি অবিক্রিত রয়ে গিয়েছিল। এখন “আমাদের পরম্পরার মাধ্যমে সেগুলি বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”
পায়েল বললেন, কোনও বিদেশি ব্র্যান্ড নয়, দেশীয় পোশাককে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে কাজ করে যাবে তাঁর সংস্থা।
খেলাধুলা বরাবরই পায়েলের পছন্দ। তৈরি করেছেন বিএসএলএ বা বেঙ্গালুরু স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন। বিএসএলএ-এর উদ্যোগে ২০১৬ সাল থেকে বেঙ্গালুরুতে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মূলত সমাজের পড়া অংশের সন্তানদের পাদপ্রদীপের আলোয় তুলে আনার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে এই সংস্থা। ফুটবল, সাঁতার প্রশিক্ষণ, ব্যাডমিন্টন এবং টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতার আয়োজনের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করা হয় এবং সেই টাকা গরিব পরিবারের সন্তানদের বিকাশে খরচ করা হয়।
নিজের কাজের জন্য ইতিমধ্যে সরকারি স্বীকৃতিও পেয়েছেন পায়েল। কর্নাটক সরকার তাঁকে “কর্নাটক গ্লোরি অ্যাওয়ার্ড” দিয়ে সম্মানিত করেছে। কোনও বাঙালিকে এই পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করার ঘটনা এই প্রথম।