একটি কিডনি নিয়ে সু্স্থভাবে বেঁচে থাকা, কিংবা স্বাভাবিক জীবনযাপন কি সম্ভব? বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, মরণাপন্ন রোগীকে কিডনি দান করলে, দাতার যেমন কোনও শারীরিক সমস্যা হয় না, তেমনি গ্রহীতাও সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারেন।
রাজ্য তথা দেশের অন্যতম অগ্রণী বেসরকারি হাসপাতাল সিএমআরআই-এর ৫২তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন এর সঙ্গে যুক্ত বিশিষ্ট চিকিৎসকরা। এঁদের মধ্যে ছিলেন রাজা ধর (ডিরেক্টর ও বিভাগীয় প্রধান, পালমোনোলজি), শ্যাম কৃষ্ণান (ইন্টারভেনশনাল পালমোনোলজি), প্রদীপ চক্রবর্তী (হেড ও ডিরেক্টর, রেনাল সায়েন্স), রাজীব সিনহা (পেডিয়াট্রিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জেন) এবং রাজেশ রাজপুত (ডিরেক্টর ও বিভাগীয় প্রধান, অস্থিরোগ)।
কিডনি প্রতিস্থাপনের সাফল্যের ছবি তুলে ধরতে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে ১০ বছরের বালক সাগর জানাকে হাজির করেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অসুস্থ সাগরকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানতে পারেন, তার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সন্তানের জন্য কিডনি দিতে এগিয়ে আসেন সাগরের মা। এরপর সাগরের কিডনি প্রতিস্থাপন করেন দুই চিকিৎসক প্রদীপ চক্রবর্তী ও রাজীব সিনহা। সাগর এখন পুরোপুরি সুস্থ। কিডনি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে সুস্থ হয়ে উঠেছে ১৪ বছরের কিশোরী সোনি লামাও। সোনি এখন ধীরে ধীরে তার অতি প্রিয় নাচের জগতে আবার ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছে।
সাগর ও সোনির কথা উল্লেখ করে দুই চিকিৎসক বলেন, কিডনি দানে মানুষের মনে সবসময় একটা ভয় কাজ করে, যা অমূলক। তাঁদের মতে, কিডনি দিয়ে দাতা যেমন বেঁচে থাকতে পারেন, তেমনি গ্রহীতারও স্বাভাবিক কাজকর্মে কোনও সমস্যা হয় না।
৫২ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই হাসপাতালের পথ চলার কথা তুলে ধরতে গিয়ে সি কে বিড়লা হাসপাতালের সিইও সিমরদীপ গিল বলেন, “চিকিৎসা ক্ষেত্রে আরও উৎকর্ষতা অর্জনই আমাদের লক্ষ্য। প্রত্যেক রোগীর জীবনরক্ষাই আমাদের ব্রত। সেই লক্ষ্যেই কাজ করে চলেছেন আমাদের চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মীরা।”
ক্যালকাটা মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা সিএমআরআই-এর পথ চলা শুরু হয়েছিল ১৯৬৯ সালে। ৪৪০ বেডের এই হাসপাতালে রয়েছে বিশ্বমানের চিকিৎসার সুযোগসুবিধা।