রাজ্য মন্ত্রিসভায় বড়সড় রদবদলের পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, খুব শিগগিরই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিতে চলেছেন মমতা। সেইসঙ্গে পার্থর ঘনিষ্ঠ মন্ত্রীদের হয় ডানা ছাঁটা হবে, নয়তো একেবারে ছেঁটে ফেলা হবে।
সোমবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে নাম না করে পার্থর দুর্নীতি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে বিপুল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “তদন্ত তাড়াতাড়ি শেষ করা হোক। দোষী সাব্যস্ত হলে, যাবজ্জীবন সাজা হলে হবে।” তিনি আরও বলেন, “অন্যায়কে আমি সমর্থন করি না। আমি ভোগের রাজনীতি করি না। আমার কাছে রাজনীতি মানে ত্যাগ, দেশসেবা, মানুষকে ভালোবাসা।”
পার্থর কাজের সঙ্গে দলের যে কোনও সম্পর্ক নেই, তা স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ইডি-র জেরার সময় পার্থ যেভাবে বারবার মুখ্যমন্ত্রীর নাম টেনে এনেছেন, তাতে বেজায় ক্ষিপ্ত তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
সূত্রের খবর, রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে পার্থর বিদায় এখন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। শুধু তাই নয়, পার্থর পরামর্শে যাঁদের মন্ত্রী করা হয়েছিল, তাঁদের কেউ কেউ হয় অপসারিত হবেন, নয়তো তাঁদের ডানা ছেঁটে কম গুরুত্বহীন দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দলে বা সরকারে পার্থর ঘনিষ্ঠ কেউ থাকুক, এটা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব চাইছেন না।
বিধানসভার উপনির্বাচনের পর রাজ্য মন্ত্রিসভায় পরিবর্তনের কথা ভেবেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু নানা কারণে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এবার দ্রুত মন্ত্রিসভায় রদবদল সেরে ফেলতে চান মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, পার্থর কাজে দল শুধু অস্বস্তিতেই পড়েনি, দলের ভাবমূর্তিও কালিমালিপ্ত হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে পার্থবাবু চরম ব্যর্থ। এরপর তাঁকে দেওয়া হয়েছিল শিল্প দফতরের দায়িত্ব। সেখানেও কাজের কাজ কিছু করতে পারেননি। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কাজে খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না। তবু প্রবীণ নেতা হিসেবে তাঁকে সম্মান দিয়ে মন্ত্রিত্বে রেখে দিয়েছিলেন। কিন্তু এবার ভাবমূর্তির প্রশ্নে কঠোর অবস্থান নিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানা গেছে, শিল্প দফতরের জন্য নতুন মুখ খুঁজছেন মমতা। এ নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তিনি ইতিমধ্যে একপ্রস্থ আলোচনা সেরে ফেলেছেন। মন্ত্রিসভায় কাকে কোন দফতর দেওয়া হবে, নতুন মুখ হিসেবে কাদের তুলে আনা যেতে পারে, এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা হয়েছে।
সোজা কথায় উজ্জ্বল ভাবমূর্তি রয়েছে, এমন লোককেই সামনের সারিতে নিয়ে আসতে চাইছেন মমতা। অর্থাৎ মন্ত্রিসভায় রদবদলে তিনি চমক দিতে চান। তাতে অনেক পরিচিত মুখ বাদ গেলেও, আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না।