সুব্রত সরকার: “গার্হস্থ্য হিংসা এসময় বেড়েছে।” খবরটা পড়ে অবাক হলাম। নারী কমিশনের কাছে নাকি গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ আসছে!
কাগজের পাতা এখন কমে গেছে। কাগজে শুধুই করোনা আর লকডাউনের খবর। মাঝেমধ্যে বিনোদন দুনিয়ার কিছু চুটকি। কে বউয়ের সাথে লুডু খেলছে।কার বউ বরের চুল কেটে দিচ্ছে। কে ডালগোনা কফি বানালো!…
মানালী আমি দুজনেই গৃহবন্দি। অফিস যাই না অনেকদিন। বেশ একঘেয়ে লাগছে এবার। ছোট্ট অরণ্যর স্কুল,ক্রেশ সব বন্ধ। ওর-ও আর ভালো লাগছে না।
কাগজ পড়তে একঘেয়ে লাগছে দেখে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি, হোয়াটসঅ্যাপে গুচ্ছের মেসেজ। দু’একটা দেখে সুনয়নায় আটকে গেলাম।একটা অডিও পাঠিয়ে লিখেছে, “বউ সামনে থাকলে শুনতে হবে না এখন। পরে শুনে জানিও কিন্তু!”
সুনয়না বাচিক শিল্পী। আমার বান্ধবী। নতুন আবৃত্তি রেকর্ড করে পাঠিয়েছে।
“শুনছো, ফ্রিজ থেকে দুটো টম্যাটো বের করে দিয়ে যাবে।” মানালীর এমন আবদারে বেমক্কা ক্ষেপে গিয়ে বললাম,”টম্যাটো দুটো নিয়েই তো রান্নাটা শুরু করতে পারতে!..”
–” একটু দিয়ে যেতে অসুবিধা কোথায়?”
“সব কিছু রেডি করেই তো রান্না করাটা সুবিধা। “
” তা আবার হয় নাকি!”
“খুব যে ত্যাঁড়া ব্যাঁকা কথা বলছো!”
“আমি বললেই ত্যাঁড়া ব্যাঁকা!”
“সাহস তো বাড়িয়ে ফেলছো…”
“ভীতু হয়ে থেকে কী লাভ?”
ছোট্ট অরণ্য আমাদের মাঝখানে এসে থমকে দাঁড়ায়। মানালীকে চড়টা আর মারতে পারলাম না।
ম্যারিনেট করা মাংসের বাটিটা ওর হাত থেকে পড়ে ছিটকে গেল শ্বেতপাথরের মেঝেতে।
আমি রান্নাঘর থেকে দূরে চলে এসে বারান্দায় চুপ করে দাঁড়ালাম!..