হোমফিচারচিন-ভারত সম্পর্কের অন্যতম সেতু রবীন্দ্র-সহযোগী তান

চিন-ভারত সম্পর্কের অন্যতম সেতু রবীন্দ্র-সহযোগী তান

চিন-ভারত সম্পর্কের অন্যতম সেতু রবীন্দ্র-সহযোগী তান

স্বপন কুমার ঘোষ, প্রবীণ আশ্রমিক, সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক

চিন ও ভারতের শিক্ষা, সাহিত্য, সংষ্কৃতির নানামুখি সম্পর্কের ইতিহাস সুপ্রাচীন। সেই যোগাযোগ বহু যুগের। বহু বৈচিত্র্যময়। মাঝে এই দু দেশের মধ্যে এই মহান সম্পর্ক ছিন্ন ও মলিন হয়ে হয়ে গিয়েছিল। এরপরে দুদেশের যে কয়েকজন মানুষের জন্য দুটি দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্যের মেল বন্ধন আবার হয়েছিল, তাঁরা হলেন রবীন্দ্রনাথ ও তান য়ুন শান। তাঁদের ভূমিকাই ছিল এক্ষেত্রে প্রধান।

রবীন্দ্রনাথের মহান কাজে একান্ত সহযোগী ছিলেন চিনের এই বিখ্যাত প্রাচ্যবিদ পন্ডিত তান। তিনি ছিলেন সে সময়ের সর্বশ্ৰেষ্ঠ প্রাচ্যবিদ্যা কেন্দ্র বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। প্রায় 55 বছর ধরে অধ্যাপক তান ভারতের আচার্যদের মতই শান্তিনিকেতনের একজন আশ্রমিক হিসাবেই জীবন কাটিয়েছিলেন।

আজ চিন-ভারত সম্পর্ক আবারও এক সঙ্কটের মুখে। সেই প্রসঙ্গে এক ঐতিহাসিক ঘটনার কথা মনে পড়ছে।

সালটা 1962। বিশ্বভারতীতে বার্ষিক সমাবর্তন অনুষ্ঠান। আম্রকুঞ্জে। ভাষণ দিচ্ছিলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বভারতীর আচার্য পন্ডিত জহরলাল নেহরু। শ্রোতাদের মধ্যে অধ্যাপক তান বসেছিলেন ধ্যানমগ্ন বুদ্ধের মত।

ভাষণের একটা সময়ে নেহেরু বলেন, ভারতকে আক্রমণ করেছে চিন। শ্রোতা তানের চোখে সেই কথায় নেমেছিল জলের ধারা। মঞ্চ থেকেই নেহরু তা লক্ষ্য করেন। ভাষণের পরে তিনি সোজা চলে এসেছিলেন তান য়ুনের কাছে। জড়িয়ে ধরেছিলেন ওঁনাকে।
এরপরে তাঁরা দুজনে গেলেন চীন ভবনে। বহুক্ষণ সেখানে দুজনে ছিলেন। নেহরু ঘুরে দেখেছিলেন গোটা ভবন।

এই ঘটনা সেদিনের। এরপরে তো দুদেশের সম্পর্কের চড়াই উৎরাই চলছেই। আজ রবীন্দ্রনাথ নেই, তানও নেই।এই ভারতপ্রেমী মানুষটি এখানের পর্ব শেষ করে ঠিকানা খুঁজে নিয়েছিলেন বুদ্ধগয়ায়। 1983 তে ওখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। 1901-এর 10 অক্টোবর তিনি জন্মেছিলেন চিনের হুনান প্রদেশের চাং লিং গ্রামে।

চিন- ভারতের আজকের এই উত্তেজনাময় আবহে তান য়ুন শানের কথা বড্ড প্রাসঙ্গিক।

ছবিতে : রবীন্দ্রনাথ ও তান য়ুন শান। লেখকের সংগ্রহ থেকে।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img