হোমসাহিত্য-সংস্কৃতিদুঃস্থদেরও পড়ার সুযোগ দিয়ে ব্যতিক্রমী পথে হাঁটতে চায় বারাসতের ডিপিএসএস

দুঃস্থদেরও পড়ার সুযোগ দিয়ে ব্যতিক্রমী পথে হাঁটতে চায় বারাসতের ডিপিএসএস

দুঃস্থদেরও পড়ার সুযোগ দিয়ে ব্যতিক্রমী পথে হাঁটতে চায় বারাসতের ডিপিএসএস

বিশেষ প্রতিনিধি, বারাসত : এলাকার নামী বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল। বাহ্যিক আড়ম্বর, চাকচিক্য বা ঝা চকচকে ক্লাসরুম, আর দশটি বড় বেসরকারি বিদ্যালয়ের সঙ্গে বারাসতের দিল্লি পাবলিক সেকেন্ডারি স্কুলের খুব একটা ফারাক নেই। তবে নামী বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল মানেই সেখানে বিত্তবান, উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরা পড়বে, সেই বাঁধাধরা মানসিকতায় বিশ্বাসী নন দিল্লি পাবলিক সেকেন্ডারি স্কুল(ডিপিএসএস)কর্তৃপক্ষ। বরং অপেক্ষাকৃত অবস্থাপন্ন ঘরের সন্তানদের পাশাপাশি দুঃস্থ, নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েদের জীবনেও শিক্ষার আলো আসুক, তারাও জীবনে প্রতিষ্ঠিত হোক, এমনটাই চান ডিপিএসএসের ফাউন্ডার চেয়ারম্যান গোবিন্দ চন্দ্র ঘোষ। সেই লক্ষ্য পূরণে যদি আর্থিক ক্ষতিও হয়,তাতেও তাঁর অসুবিধা নেই। বললেন, “দুঃস্থ, মেধাবী পড়ুয়াদের আমাদের স্কুলে পাঠিয়ে দিন, তাদের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব নেব আমরাই।”

বর্তমানে স্কুলে পাঠরত অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রীর ফি-ও মকুব করে দেওয়া হয়েছে। এমনটাই দাবি গোবিন্দবাবুর। বললেন,পুরোপুরি ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি নিয়ে তিনি স্কুল চালান না। পড়ুয়াদের নানারকম সুবিধা দিয়ে এভাবে স্কুল চালাতে গিয়ে তাঁকে আশেপাশের অনেক প্রতিদ্বন্দ্বীর রোষের মুখেও পড়তে হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোবিন্দবাবু।

তিনি জোরের সঙ্গে বলেন, “অনেক স্কুলেই সারা বছর ধরে অভিভাবকদের কাছ থেকে নানাভাবে টাকা আদায় করা হয়। কিন্তু ডিপিএসএসে শুধুমাত্র ফি ছাড়া পড়ুয়াদের কাছ অন্য কোনওরকমভাবে টাকা নেওয়া হয় না। এমনকী বছরের বিভিন্ন সময়ে যত রকমের অনুষ্ঠান হয়, তার খরচও বহন করে স্কুল।”

তিনি জানান, শুধুমাত্র ক্লাস নয়, স্কুল ছুটির পর ৩টে থেকে সাড়ে ৪টে পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের দেড় ঘণ্টার বিশেষ কোচিং-ও করানো হয়। অপেক্ষাকৃত দুর্বল, ভালো রেজাল্ট করতে না পারা ছেলেমেয়েদের জন্যই এই ব্যবস্থা।

স্কুলের ভাইস চেয়ারপার্সন সুনীতা ঘোষ জানান, পড়ুয়াদের সামগ্রিক বিকাশের দিকে লক্ষ্য রেখেই ছাত্রছাত্রীদের এখানে শিক্ষার পাঠ দেওয়া হয়। পঠনপাঠনের মান যথেষ্ট উন্নত হওয়ায় অন্য স্কুল ছেড়ে পড়ুয়ারা এখানে ভর্তি হচ্ছে বলে দাবি করেন সুনীতাদেবী। তিনি বলেন, ফ্যাকাল্টি অত্যন্ত ভালো হওয়ার কারণে অভিভাবকদের মধ্যে এই স্কুলের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। ছাত্রছাত্রীদের যাতে রোজ ভারী ব্যাগের বোঝা নিয়ে স্কুলে না আসতে হয়, সেই লক্ষ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুনীতা ঘোষ।

স্কুলের চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারপার্সন দুজনেই জানালেন, প্রতিষ্ঠার মাত্র ২ বছর মধ্যেই যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছে দিল্লি পাবলিক সেকেন্ডারি স্কুল। তাঁদের লক্ষ্য, সেই সুনাম বজায় রেখে একে এলাকার সেরা স্কুলে পরিণত করা।

শনিবার ছিল এই স্কুলের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। সেখানে বিভিন্ন বিভাগে সেরা পড়ুয়াদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। শুধু ছাত্রছাত্রীরা নয়, পুরস্কৃত করা হয় সাধারণ কর্মী থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img