আমরা শ্রী ম বলতে একজনকে বুঝি, মহেন্দ্র নাথ গুপ্ত। যিনি রামকৃষ্ণ দেবের ভাষ্য গ্রন্থাকারে লিপিবদ্ধ করেছেন, যা রামকৃষ্ণ কথামৃত নামে পরিচিত।
কিন্তু অধ্যাত্ববাদের দেশ ভারতে এই মুহূর্তে আর এক জন আছেন যিনি শ্রী ম নামে পরিচিত হচ্ছেন । আদতে মুসলিম পরিবারের সন্তান মুমতাজ আলি বৈদিক শিক্ষার জ্ঞানে নিজেকে আলোকিত করেন।১৯ বছর বয়সে অন্ধ্র প্রদেশের আধ্যাত্মিক গুরু মহেশ্বর্নাথ বাবাজির সংস্পর্শে আসেন।
যোগ শিক্ষার সাধনার ফল পেতে হিমালয়ে যান। শ্রী ম কেরালার থিরুভান্থাপুরাম এর ভূমিপুত্র। শ্রী ম এর বক্তব্য, যথার্থ মানুষ হয়ে উঠতে প্রয়োজন ঈশ্বর জ্ঞান। আর এই জ্ঞানের জন্য প্রয়োজন শিক্ষা। তাই তিনি প্রান্তিক শিশুদের শিক্ষার আলোকে আলোকিত করতে গড়ে তুলেছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দি পিপল গ্রোভ স্কুল। একটি ছোট্ট জমিতে স্কুল শুরু ১৯৯৯ সালে। অন্ধ্রপ্রদেশের মাদানাপল্লে অবস্থিত এই স্কুলের ছাত্র সংখ্যা প্রায় ২০০।১৫ জন শিক্ষক শিক্ষিকা,১১ টি ক্লাসরুম,১ টি লাইব্রেরী, ১ টি বিজ্ঞান গবেষণাগার ও একটি ইন্টারনেটযুক্ত কম্পিউটার শিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। মূলত প্রান্তিক আদিবাসী শিশুদের এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী ম একাধারে সমাজনির্মাণ কর্মী এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে এক সৈনিক হিসেবেই নিজেকে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন ।
সৎসঙ্গ ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে ভারতীয় সনাতন ধর্মের প্রচার আর শিক্ষা দিতে তিনি বিশ্বের বহু দেশ পরিক্রমা করেছেন । কলকাতার রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে তাঁর রয়েছে আত্বিক যোগ। জীবনের ভিত গড়ে তুলতে স্বামী যোগানন্দের যোগ শিক্ষার গুরুত্ব কথাও তিনি বলেন । মঙ্গলবার কলকাতার প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিক ও তাঁর গুণগ্রাহী দের জীবনের অর্থ ও লক্ষ্য সম্বন্ধে আলোচনা করেন । শ্রী ম এর অটোবায়োগ্রফি বেস্ট সেলার হিসেবে পরিচিত।তিনি বেশকিছু বই ও লিখেছেন । দি জার্নি কন্টিনুয়াস, শূন্য, অন মেডিটেশন, উল্লেখযোগ্য। তাঁর প্রতিষ্ঠিত সংস্থাগুলির মধ্যে আছে দি সৎসঙ্গ বিদ্যালয়, সৎসঙ্গ রুরাল বিদ্যালয়, সৎসঙ্গ স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মানব একতা মিশন, সর্বধর্ম কেন্দ্র।
উল্লেখ্য ওয়াক অফ হোপ নামে ১৫ মাস ব্যাপী পদযাত্রা করেছেন কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর। শান্তি, সহিষ্ণুতা ও সম্প্রীতির শ্লোগান নিয়ে ১১ টি রাজ্যের সাত হাজার পাঁচশ কিলো মিটার পথ তিনি অতিক্রম করেছেন পদব্রজে।