ডা: সুমিত চট্টোপাধ্যায়
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া আটকানোর পরিপ্রেক্ষিতে সামনের দু তিন সপ্তাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
যথাসম্ভব ভীড়ভাট্টা এড়িয়ে চলুন।
মাস্ক পরতে পারলে ভাল-
তবে সবচেয়ে জরুরি, বারেবারে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। বিশেষত বাইরে থাকলে। স্যানিটাইজার নেই বলে বিলাপ করার কোনও দরকার নেই!
করোনাভাইরাস আর অন্য কিছু ভাইরাসের মতনই কাশি আর জ্বরের কারণ। তবে এটা একটু নতুন ধরণের ভাইরাস, তাই মানবদেহে এর বিরূদ্ধে আগে- থেকে- তৈরি ইমিউনিটি তেমন নেই। তার মানে এই নয় যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেই মৃত্যু অবধারিত। আমাদের দেহের জেনারেল ইমিউনিটি যথেষ্টই সক্ষম এই রোগটির সঙ্গে লড়াই করতে। শিশু এবং বৃদ্ধদের আশংকা একটু বেশি। কারণ শিশুদের ইমিউনিটি পুরোপুরি ম্যাচিওর হয় না আর বৃদ্ধদের ইমিউনিটির স্টক পড়তির দিকে থাকে।
ভয়ে সারা হয়ে থাকার কিছু নেই।
সর্পাঘাতের একটা বড় অংশের রোগীর হাল খারাপ হয়ে যায় কিন্তু বিষের জন্য নয়, ভয়ে। কাজেই আশংকিত হয়ে সবসময় মরমে মরে থাকার কিছু নেই।
তার মানে কি এই যে আমরা বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়াব?
না।
মোটেও তা নয় ।
আউটডোর অ্যাক্টিভিটি কমে গেলে রোগটার প্রাদুর্ভাবও কমে যাবে।
এবং সেইকারণেই মন্দির মসজিদও বন্ধ রাখা হয়েছে – যাতে রোগটা না ছড়ায়। ‘ ভগবান মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন’ -এই ধরণের বালখিল্য ধারণা মনে না রাখাই ভাল।
আর অনেকেই দেখছি – ‘এই সময়ে ডাক্তাররাই আপনাদের একমাত্র সহায়’ ‘ এখন কেন ডাক্তারদের কাছে আসছেন – পেটানোর সময় মনে থাকে না?’ এই ধরণের পোস্ট করে তৃপ্তি পাচ্ছেন।
এটাও ততোধিক শিশুসুলভ।
দেশ আক্রান্ত হলে আর্মির কাজ দেশকে রক্ষা করা।
তেমনি অসুখবিসুখ হলে সেবা করার দায়িত্বটাও ডাক্তারদের ।
এ নিয়ে এত সেন্টিমেন্টাল হওয়ার কিছু নেই।
আমরা যারা চিকিৎসক তারা প্রাণপণ চেষ্টা করব এই মহাসংকটের সময় যথাসম্ভব পাশে থাকার।
পাশাপাশি আমার নন মেডিকাল বন্ধুদের প্রতি অনুরোধ যে আপনারাও ছোট ছোট কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতাগুলো মেনে চলুন। ‘ ও কিছু হবে না’ এই ধরণের ভ্রান্ত ধারণা বিরাট বিপদ ডেকে আনতে পারে।
ভীত হবেন না-
কিন্তু অসতর্কও হবেন না।
(ফেসবুক থেকে নেওয়া)