হোমফিচারলকডাউনে নেই খাবার, কচু পাতা সেদ্ধ খেয়েই দিন কাটছে শতাধিক যাযাবর পরিবারের

লকডাউনে নেই খাবার, কচু পাতা সেদ্ধ খেয়েই দিন কাটছে শতাধিক যাযাবর পরিবারের

লকডাউনে নেই খাবার, কচু পাতা সেদ্ধ খেয়েই দিন কাটছে শতাধিক যাযাবর পরিবারের

দেবাশিস পাল,মালদহ : লকডাউনের জেরে কাজ নেই। ঘরে খাবার নেই। তাই কচু পাতা সেদ্ধ খেয়েই দিন গুজরান। লকডাউনের মধ্যে এভাবেই বেঁচে রয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার গড়গড়ি ,বাইশা বাগান প্রভৃতি এলাকার ১০০ যাযাবর পরিবার।

এঁদের কেউ মধু সংগ্রহ করেন। কেউ তাবিজ মাদুলি, কেউবা কবিরাজি ওষুধ বিক্রি করেন। কেউ সাপের খেলা দেখিয়ে পেট চালান। দল বেঁধেই এঁরা ঘোরাঘুরি করেন। লকডাউনের জেরে তাও বন্ধ। লকডাউন শুরু হওয়ার দিনে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের উদ্যোগে এঁদের ত্রাণ দেওয়া হয়েছিল।
তা এখন শেষ। তাই এখন খাবার বলতে আশেপাশের এলাকা থেকে সংগ্রহ করে আনা কচু পাতা সেদ্ধ আর ভাতের মাড়।

এঁদেরই একজন জগদীশ বেদ জানালেন, ‘চারদিকে সব বন্ধ। আমরা কোথাও বেরোতে পারছি না। প্রথম দিন এলাকার বিডিও অফিস থেকে চাল ও অন্যান্য খাবার পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু সেটা শেষ হয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে কচুপাতা সেদ্ধ করে খাচ্ছি। আমাদের মধ্যে কয়েকজনের রেশন কার্ড থাকলেও, সেখান থেকেও খাবার পাচ্ছি না। আমরা চাই, সরকার আমাদের বাচ্চাদের কথা ভেবে কিছু খাবারের ব্যবস্থা করুক।’

মালদহ জেলার ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক শ্রীমন্ত মিত্র বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরতেই প্রশাসনিক মহলে আলোড়ন উঠেছে। জেলা পরিষদের শিশু নারী ও ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ মর্জিনা খাতুন জানান , ওই এলাকার মানুষের দুর্দশার কথা তিনি শুনেছেন। স্থানীয় সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিককে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মর্জিনা খাতুন। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অনির্বাণ বসু জানালেন, ওঁদের প্রথম দিনই চাল, আলু , সাবান ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছিল।

এই প্রসঙ্গে শ্রীমন্ত মিত্র জানান , কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, তিনি শুধুমাত্র এলাকার মানুষের দুর্দশার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছিলেন। এই মুহূর্তে যেহেতু রাস্তায় নেমে অর্থসাহায্য তোলা সম্ভব নয়, তাই দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে ওই পরিবারগুলির হাতে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শ্রীমন্তবাবু।
জেলা তৃণমূলের যুব সহ-সভাপতি বুলবুল খান শিগগিরই ওই পরিবারগুলির হাতে ত্রাণ তুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
এদিকে , পরিবারগুলির দুরবস্থার কথা জানতে পেরে হরিশ্চন্দ্রপুর রুটি ব্যাংকের সদস্যরা আজ ৪০০ জনের হাতে খাবারের প্যাকেট তুলে দেন। আগামীতেও রোজ খাবারের প্যাকেটের ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন সংস্থার সদস্যরা।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img