বেলুড় মঠ, ব্রহ্মচারী-প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ৷ সকল ব্রহ্মচারী আরতির পর পূজ্যপাদ মহারাজকে( স্বামী বীরেশ্বরানন্দ মহারাজ ) প্রণাম করতে যায় ৷
একদিন দুজন ব্রহ্মচারী সকলের সঙ্গে প্রণাম করতে যেতে পারেনি—একটা কাজে তারা আটকে পড়েছিল ৷ সকলে প্রণাম করে ফিরে এলে তারা দুজন মহারাজকে প্রণাম করতে গেল ৷ সেই সময় দুজন ভক্ত মহারাজের ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন ৷ তাঁদের চেহারায় ও পোশাকে ধনী ও শিক্ষিত বলে মনে হলো ওই দুজন ব্রহ্মচারীর ৷
তাঁরা বরিয়ে যেতে ব্রহ্মচারী দুজন প্রণাম করতে ঢুকল ৷ পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে গেলে মহারাজ তাদের বারণ করেন ৷তারা ভয় পেয়ে গেল৷
তারা ভাবল কি এমন অন্যায় তারা করেছে যার জন্য, আজ তাদের প্রণাম করার অধিকার নেই?
এরকম যখন তারা ভাবছে তখন মঠের ক্ষৌরকার মূরতরাম প্রতিদিনের মতো মহারাজকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করতে গেল৷ মহারাজ তাকেও নিষেধ করলেন ৷
তখন করজোড়ে সে জিজ্ঞেস করল ঃ” মহারাজ ,আমি কি অন্যায় করেছি যে, আমাকে প্রণাম করতে নিষেধ করছেন ?”
তখন মহারাজ বলেনন ঃ” একটু আগে যারা প্রণাম করে গেল ,তারা ভালো নয় ৷ তুমি শ্যামল (সেবক) কে বলো একটু গঙ্গাজল নিয়ে আসতে৷ “
ব্রহ্মচারী দুজন পিছনে নির্বাক বিস্ময়ে দাঁড়িয়ে স্পষ্টই লক্ষ্য করছিল মহারাজের পা যেন যন্ত্রণায় আড়ষ্ট হয়ে রয়েছে তখনও৷
শ্যামল মহারাজ গঙ্গাজল দিয়ে তাঁর পা ধুইয়ে দিলেন৷
তারপর মূরতরামকে প্রণাম করতে দিলেন৷ ব্রহ্মচারী দুজনও তখন প্রণাম করে বেরিয়ে এল, তারা ভাবছে ঃ মহারাজ নিজে অপরের পাপ গ্রহণ করছেন, কিন্তু অন্য কাউকে যাতে সেই পাপ স্পর্শ করতে না পারে তার জন্য কত সতর্কতা ! অহেতুকী করুণা !
স্বামী চৈতন্যানন্দ ( সংগৃহীত )