বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা গান সেদিন আমাকে দিয়েছিলেন অমর একুশের স্রষ্টা গাফফার চৌধুরী

gaffar
অমর একুশের গানের রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরী, সুরকার সৌম্যেন অধিকারী ও নাট্যকার ড. আনোয়ারুল হক

সৌম্যেন অধিকারী
আজ একুশে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। এপার ওপার দুই বাংলা সহ সারা পৃথিবীর বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এই দিনটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও আমাদের কাছে সুপরিচিত। আজকের দিনে বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষাভাষীর সকলের মুখে মুখে ফেরে একটি গানের করুণ সুর ……”আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি”।

১৯৫২ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারি এই গানটি লিখেছিলেন সাংবাদিক ও লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী এবং ১৯৫৪ সালে গানের কথায় সুরারোপ করেন সে সময়কার নামকরা সুরকার এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ মাহমুদ। প্রথমে যদিও আবদুল লতিফ গানের কথায় সুরারোপ করেছিলেন তবে পরবর্তী কালে আলতাফ মাহমুদের করা সুরটিই জনপ্রিয়তা পায়।

এই অমর গানের রচয়িতা দীর্ঘদিন লন্ডন প্রবাসী। মানুষটি আজও নিয়মিত লেখেন, আজও ভাবেন সেই রক্তঝরা দিনগুলির কথা। বয়সের ভার তাঁকে কাবু করতে পারেনি। শারীরিক কারণে সব সময় লিখতে না পারলেও, তাঁর বলা কথা অনুলিখনের হয়ে নিয়মিত প্রকাশিত হয় লন্ডন, বাংলাদেশ, ভারত সহ সারা পৃথিবীর নানান বাংলা পত্র-পত্রিকা, কাগজে ও অন্যান্য মাধ্যমে।

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর ওপর তাঁর লেখা দুটি গানে সুর ও কণ্ঠদান করেছেন কলকাতার বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী সৌম্যেন অধিকারী। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে ‘তুমি যে মৃত্যুঞ্জয়’ অ্যালবামে অন্যান্য গানের সাথে ‘এসেছিলে তুমি এই বাংলায়’ ও ‘তোমার নেতা আমার নেতা’ (সমবেত কণ্ঠে) গান দুটি প্রকাশিত হয়েছে। পূর্বাচল প্রযোজিত এই অ্যালবামের গ্রন্থনা, পরিকল্পনা ও বিন্যাস ড. আনোয়ারুল হকের।

এ প্রসঙ্গে সুরকার সৌম্যেন অধিকারী জানালেন, “আবদুল গাফফার চৌধুরী সাথে আমার পরিচয় লন্ডনে, ২০০৮ সালে। একটি অনুষ্ঠানে গাইছি ‘মাগো ভাবনা কেন’ গানটি, সামনে বসে গান শুনছিলেন তিনি, হঠাৎ বলে উঠলেন আরও মুক্তিযুদ্ধের গান শুনতে চাই। শুনিয়ে ছিলাম একের পর এক বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের গান। অনুষ্ঠান শেষে তাঁর সাথে কিছু কথা বলে জেনেছিলাম, বাংলার সেই রক্তঝরা দিনগুলি আজও তাঁকে দেশপ্রেমে উদ্দীপ্ত করে। তার পর মাঝে মধ্যে বিলেতে গেলেই নানান অনুষ্ঠানে দেখা হত, কুশল বিনিময় হত আমাদের মধ্যে।”

কিন্তু তাঁর সাথে আরও সম্পর্ক গভীর হয় আমার বিশেষ বন্ধু বিশিষ্ট নাট্যকার ড. আনোয়ারুল হকের মাধ্যমে। ড. আনোয়ারুল হকের সাথে গাফফার চৌধুরীর মধুর সম্পর্ক। বাড়িতে তাঁর সাথে প্রথম গিয়েছিলাম ১৯শে অক্টোবর, ২০১৮তে, সেদিনই আমাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ স্মরণে তাঁর লেখা দুটি গান সুর করার জন্য। সেই থেকে তাঁর সাথে আমার সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। ‘তুমি যে মৃত্যুঞ্জয়’ শীর্ষক গানের সিডি প্রকাশ পাবার পর গান শুনে ফোনের মাধ্যমে তাঁর আনন্দের প্রকাশ পেয়েছে সুদূর লন্ডন থেকে। শুভেচ্ছা বাণী পাঠিয়েছিলেন প্রকাশ অনুষ্ঠানের জন্য।

Previous articleJBNSTS : বিজ্ঞানের প্রসারে স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষপূর্তিতে সপ্তাহ জুড়ে অনুষ্ঠান
Next article“বই কিনুন, লাইব্রেরি জিতুন”, এবারের মেলায় বইপ্রেমীদের জন্য লটারি গিল্ডের