হোমকলকাতাকলকাতার বুকে বিধবার বাড়ি দখল, হুমকির অভিযোগ, নিরাপত্তার নির্দেশ মহিলা কমিশনের

কলকাতার বুকে বিধবার বাড়ি দখল, হুমকির অভিযোগ, নিরাপত্তার নির্দেশ মহিলা কমিশনের

কলকাতার বুকে বিধবার বাড়ি দখল, হুমকির অভিযোগ, নিরাপত্তার নির্দেশ মহিলা কমিশনের

উত্তর কলকাতায় বিধবা প্রৌঢ়ার ওপর নির্যাতন এবং জোর করে বাড়ি দখলের চেষ্টার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে যান রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি ওই প্রৌঢ়ার সঙ্গে কথা বলেন এবং মহিলার নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন লীনাদেবী।

লীনাদেবীর কাছে তাঁর ওপর জুলুমবাজি ও নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরেন 99A বিধান সরণির বাসিন্দা ৭০ বছরের পৃথা নন্দী। তিনি অভিযোগ করেন, “ফেব্রুয়ারি মাসে আমার স্বামী অশোক কুমার নন্দী প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর পর থেকে ননদ এবং আমাদের দোকানঘরের ভাড়াটিয়া সম্পত্তি আত্মসাতের ষড়যন্ত্র করে চলেছেন। পুলিশ, পুরসভা, এমনকি স্থানীয় কাউন্সিলর তথা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষকেও বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।”

তিনি বলেন, “পৈতৃক সূত্রে আমার স্বামী ৯৯এ এবং ৯৯সি বিধান সরণির বাড়িটির অর্ধাংশের মালিক। এই সম্পত্তি ভাগাভাগি হয়নি। আমরা বরাবরই ৯৯এ বাড়িটিতে থেকেছি। এখানে আমার স্বামী মন্মথ কেবিন নামে একটি চা ও স্ন্যাক্সের দোকান চালাতেন। কিন্তু স্বামী মারা যাওয়ার পর আমার ননদ একতলার দোকান ঘরের ভাড়াটিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাকে বাড়িছাড়া করতে চাইছেন।”

পৃথাদেবীর অভিযোগ, “বর্তমানে আমি একরকম বন্দির মতো জীবনযাপন করছি। আমার নীচের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পিছনে একটি দরজা রয়েছে। তাতেও তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাকে কার্যত ঘরবন্দি করে রাখা হয়েছে। আমার ব্যাঙ্কের পাস বই, চেক, ক্যাশ সার্টিফিকেট সব কিছু চুরি করা হয়েছে। এমনকি যে চিকিৎসক আমাকে নিয়মিত দেখেন, তাঁকেও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।”

রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের কাছে তাঁর প্রাণ সংশয়েরও অভিযোগ করেন পৃথাদেবী। তাঁর অভিযোগ, “একটি অন্ধকার ঘরে আমি কোনওরকমে বেঁচে রয়েছি। স্থানীয় কিছু গুন্ডা আমাকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে চলেছে।”

বিধবা প্রৌঢ়ার অভিযোগ শোনার পর স্থানীয় থানার ওসিকে তাঁর নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন লীনাদেবী। পৃথাদেবীকে সবরকমের সাহায্যেরও আশ্বাস দেন তিনি।

এদিকে, খাস কলকাতার বুকে এভাবে সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগকে ঘিরে বিভিন্ন মহলে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। শুধুমাত্র মহিলা কমিশন নয়, আদালত, পুলিশ, পুরসভা সব মহলে দরবার করেছেন। আদালত থেকে ইনজাংশান জারি করা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি। এলাকাটি কলকাতা পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন, যার কাউন্সিলর হলেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। অভিযোগ পেয়ে তিনি সরেজমিনে অবস্থা দেখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে বেআইনি কাজ বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img