বিদ্যুৎ কর্মীদের নিরাপত্তার প্রশ্নে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভূমিকায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ কর্মী ইউনিয়ন। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান-কাম-ম্যানেজিং ডিরেক্টরের কাছে লেখা এক চিঠিতে অরূপের বিরুদ্ধে উদ্ধত ও আপত্তিজনক ব্যবহারের অভিযোগ এনেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ ওয়ার্কমেন্স ইউনিয়ন। সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি জিতেন নন্দী সাম্প্রতিক কালের একাধিক দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে লিখেছেন, “অত্যন্ত ক্ষোভ ও বিস্ময়ের সাথে আমরা লক্ষ্য করলাম যে, মন্ত্রী মহোদয় ভিডিও কনফারেন্স করে কোনও বস্তুনিষ্ট তদন্ত ছাড়াই দুর্ঘটনার দায় অধস্তন কর্মীদের উপরে চাপিয়ে কর্মীদের মনোবল হরণ করছেন।”
কর্মী ইউনিয়নের অভিযোগ, “১৯৫৫ সালে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ গঠিত হলেও ২০০০ সাল পর্যন্ত এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজে কোনও বিধিবদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। তৎকালীন বিদ্যুৎ পর্ষদ কর্তৃপক্ষের নিকট বার বার বলা সত্ত্বেও কোনো সেফটি অর্গানাইজেশন গড়ে তোলা হয়নি।”

তিনি লিখেছেন, “বিদ্যুতের ন্যায় ঝুঁকিবহুল সংস্থায় কাজের প্রথম প্রয়োজন, আদেশনামা অনুযায়ী সংখ্যাভিত্তিক দক্ষ শ্রমশক্তি অর্থাৎ দক্ষ কর্মী। সাবস্টেশনের অপারেশন বিভাগে কোথাও অপারেটর ৪ জনের পরিবর্তে ৩ জন, কোথাও আবার ২ জন। আগে বিদ্যুৎ পর্ষদে যখন সমস্ত কাজ স্থায়ী কর্মীরা করতেন, তখন লাইন্সমেন এবং তাঁর উপরের কর্মীরা ছাড়া চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীদের পোলে উঠতে দেওয়া হত না। এখন কোনও অভিজ্ঞতা নেই, এমন অদক্ষ কর্মীদের দিয়ে বিদ্যুতের মত সংস্থায় কাজ করানো হচ্ছে। তাই দুর্ঘটনা বাড়ছে।”
জিতেনবাবুর অভিযোগ, মালপত্রের অপ্রতুলতা বা রক্ষণাবেক্ষণের কাজে অবহেলার কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে এই বিষয়ে কোনও তদন্তও হলো না। কয়েক দিন আগে বৈদ্যুতিক তার কেটে মাটিতে পড়ে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়। এরপর বিদ্যুৎ মন্ত্রী তড়িঘড়ি ভিভিও কনফারেন্স করে দুটি সিসিসির দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিদের ‘ইএসআর’ বহির্ভূত একটি নতুন টার্ম “কমপালসারি ওয়েটিং লিস্ট” ব্যবহার করে ছুটিতে পাঠিয়ে দিলেন। অথচ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্রের অভাবে লাইনগুলি কেন মেরামতি করা হল না, তার কোনও তদন্ত না করেই যাঁরা রাজ্যে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে সচল রেখেছেন, তাঁদের শাস্তি দেওয়া হল।” পরিস্থিতি না বদলালে আন্দোলনেরও হুমকি দিয়েছে ইউনিয়ন।