পাম অ্যাভিনিউয়ের দু’কামরার ফ্ল্যাট তিনি কখনও ছাড়তে চাননি। সাদামাটা এই ফ্ল্যাটেই একজন গড়পড়তা বাঙালির মত জীবনযাপন করতেন তিনি। সঙ্গী ছিল বই, গানের ক্যাসেট। পাম অ্যাভিনিউয়ের সেই বাড়ি থেকে আজ শেষ বারের মতো বেরিয়ে গেলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। প্রবীণ এই সিপিএম নেতার মরদেহ রক্তপতাকায় মুড়ে তোলা হয় শববাহী শকটে। তারপর তা নিয়ে যাওয়া হয় পিস ওয়ার্ল্ডে।
শকটের পিছনে ছিলেনলেন বুদ্ধ-জায়া মীরা ভট্টাচার্য। হাত জোড় করে শেষ নমস্কার জানালেন তিনি। কেউ কেউ ভেঙে পড়লেন কান্নায়। কাচে ঢাকা শববাহী শকটে শায়িত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। চোখে সেই মোটা ফ্রেমের চশমা। থুতনিতে গত কয়েক দিনের দিনের না কামানো দাড়ি। গত কয়েক দিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন বুদ্ধদেব। সেই কারণেই দাড়ি কামিয়ে দেওয়া যায়নি তাঁর। পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাট থেকে বেরোনোর আগে তাঁর মরদেহের চক্ষু থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয়।
বৃহস্পতিবার পিস ওয়ার্ল্ডেই রাখা থাকবে বুদ্ধদেবের নশ্বর দেহ। শুক্রবার সকাল ১১টায় সেখান থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে রাজ্য বিধানসভায়। বিধানসভায় মরদেহ থাকবে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত । সেখান থেকে বেলা ১২টা নাগাদ দেহ নিয়ে আসা হবে সিপিএমের রাজ্য দফতর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে। সেখানেই মরদেহ শায়িত থাকবে বিকাল ৩টে পর্যন্ত। সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে দীনেশ মজুমদার ভবনে। সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠনের রাজ্য দফতরে। বুদ্ধদেব ছিলেন প্রাদেশিক যুব সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। সভাপতি ছিলেন তাঁর বন্ধু দীনেশ মজুমদার। পৌনে ৪টে পর্যন্ত বুদ্ধদেবের দেহ শায়িত থাকবে সেখানে। সেখান থেকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পরে মিছিল করে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে শিয়ালদহের এনআরএস হাসপাতালে। সেখানেই বুদ্ধদেবের দেহ দান করা হবে ভবিষ্যতের চিকিৎসার গবেষণার কাজে।
