রথীন চক্রবর্তী
(করোনা ভয়ঙ্কর চেহারা নিয়েছে। ওষুধ, অক্সিজেন না পেয়ে মারা যাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। হোমিওপ্যাথি ওষুধে বাড়িতে চিকিৎসা করে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে। এ নিয়ে বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক রথীন চক্রবর্তীর পরামর্শ এখানে তুলে ধরা হল।)
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মূলত ৩টি বিষয়ের ওপর নজর দেওয়া উচিত।
এক) বাড়িতে কারোর হয়নি, কিন্তু পাশের বাড়ির কেউ সংক্রমিত হয়েছেন।
দুই) পাশের বাড়ির আক্রান্তের সংস্পর্শে হয়তো কেউ এসেছেন। কিংবা
তিন) বাড়িতে কেউ আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁর সংস্পর্শে এসেছেন।
সবক্ষেত্রেই মূলত কয়েকটি উপসর্গ বেশি করে দেখা যাচ্ছে। গা-হাত-পায়ে ব্যথা, জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, জল তেষ্টা, পেটের গোলমাল।
সরাসরি উপসর্গের ক্ষেত্রে গা-হাত-পা ব্যথা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি শুয়ে থাকলে উপশম হয়, তাহলে ব্রায়োনিয়া। চলাফেরা করে ভাল লাগলে রাসটক্স। আর এই উপসর্গের সঙ্গে গলায় যদি ব্যথা থাকে, তাহলে হিপার সালফার।
আগে উপসর্গ ঠিকভাবে বোঝা জরুরি।
১. তবে সবক্ষেত্রেই ব্রায়োনিয়া দিলেও, ভাল ফল মিলছে। ব্রায়োনিয়া-২০০ পরপর ৬ দিন খেতে হবে। দানা হলে ৫-৬টা, লিক্যুইড হলে ১ ফোঁটা।
২. যখন খুব জ্বর থাকছে, তখন বেশি প্যারাসিটামল না খেয়ে, উপসর্গ অনুযায়ী ব্রায়োনিয়া, রাসটক্স, হিপার সালফার দিলে ভালো কাজ হবে।
এক কাপ জলে ৮-১০টি দানা ফেলে ঘড়ির কাঁটা ঘোরার মতো চামচ দিয়ে গুলে নিতে হবে। তারপর এক-দেড় চামচ খেতে হবে। জ্বর নামতে থাকলে, রিপিট করার প্রয়োজন নেই। যদি দেখা যায়, জ্বর বাড়ছে বা কিছুটা নেমে আটকে রয়েছে, তাহলে ব্রায়োনিয়া-৩০ দিতে হবে একই পদ্ধতিতে।
৩. করোনার উপসর্গ হিসেবে ডায়েরিয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে অ্যালো ওষুধটি ভালো কাজ করবে। তবে ডায়েরিয়ার সঙ্গে গা, হাত, পা ব্যথা করলে, রাসটক্স ভালো কাজ করবে।
অক্সিজেন লেভেল নামতে থাকলে, বুকে ও গলায় চাপ অনুভব করলে, ল্যাচেসিস খেতে হবে। আর তা না হয়ে খুব ঢেঁকুর উঠতে থাকে, হাঁ করে বাতাস নিতে হচ্ছে, তখন কার্বোভেজ দিতে হবে।
আর যদি মনে হয়, বুক এবং অন্য সবকিছু চেপে দমবন্ধ হয়ে আসছে, তখন নেট্রাম মিউর খুব ভালো কাজ দেবে।
নাকে কাঁচা জল, সর্দি এবার খুব বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। যদি এ ধরনের উপসর্গ থাকে, তাহলে অ্যাকোনাইট চলতে পারে।
এবারে যে কোনও ওষুধের ক্ষেত্রে ২০০ পাওয়ার ব্যবহার করা ভালো। আরেকটি কথা, প্রতিষেধক নেওয়ার পর ব্রায়োনিয়া-২০০ চার-পাঁচ দিন খেলে বরং ভালোই হবে।