হোমপরিবেশFishing Cat : বেপরোয়া যানের বলি একের পর এক বাঘরোল, উদ্বিগ্ন পরিবেশপ্রেমীরা

Fishing Cat : বেপরোয়া যানের বলি একের পর এক বাঘরোল, উদ্বিগ্ন পরিবেশপ্রেমীরা

Fishing Cat : বেপরোয়া যানের বলি একের পর এক বাঘরোল, উদ্বিগ্ন পরিবেশপ্রেমীরা

অভিজিৎ হাজরা, হাওড়া : বাঘরোল (Fishing Cat)। মাছ এদের প্রিয় খাদ্য। তাই চলতি কথায় একে মেছো বিড়ালও বলে। হাওড়ার শ্যামপুর, উদং, ফতেপুর, নওপাড়া, নারিট, নোরিট, সিরোল গাজীপুর, কলবাঁশ, জয়পুর সহ জেলার বিভিন্ন এলাকা বাঘের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র। তবে বেপরোয়া যানের দৌরাত্ম্যে বাঘরোল আজ বিপন্ন। ওই এলাকাগুলিতে প্রায়ই দুর্ঘটনায় বাঘরোলের মৃত্যু হচ্ছে, যা পরিবেশপ্রেমীদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

কোথাও কোথাও মানুষও এদের পিটিয়ে মারছে। অথচ বাঘরোল অত্যন্ত নিরীহ প্রকৃতির। এরা কোনও ক্ষতি করে না। শুধুমাত্র মাছ শিকারই এদের একমাত্র পছন্দ।

শ্যামপুরে সহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা সম্প্রসারণের কারণে চালকরা লাগামছাড়া গতিতে গাড়ি নিয়ে ছুটছেন। আর তাতেই মারা পড়ছে বাঘরোল সহ অন্যান্য প্রাণী। এর মধ্যে শিয়াল, সাপ, গোসাপ, বেজির (নেউল) মতো প্রাণীও রয়েছে। পরিবেশ কর্মীরা জানাচ্ছেন, ২০১৮ সাল থেকে এই বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত হাওড়ার বিভিন্ন অংশে ১৫০টিরও বেশি বাঘরোল, শিয়াল সহ অন্যান্য প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে।

পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক কোনও ব্যবস্থা না থাকার কারণে এভাবে নিরীহ প্রাণীগুলিকে মরতে হচ্ছে। তাই যেখানে বাঘরোল সহ অন্যান্য প্রাণী বেশি রাস্তা পারাপারের করে, সেইসব এলাকা চিহ্নিত করে সচেতনতামূলক বোর্ড লাগানোর দাবি তুলেছেন পরিবেশপ্রেমীরা। ইতিমধ্যে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে এলাকায়-এলাকায়, স্কুল-কলেজে, সচেতনতা শিবির করে মানুষকে সচেতন করার কাজে নেমেছে।

বন দফতরের উলুবেড়িয়া রেঞ্জ অফিসার রাজেশ মুখোপাধ্যায় বলেন, “যে সমস্ত এলাকায় এই সব প্রাণী চলাচল করে, সেখানকার রাস্তাগুলিতে গাড়ি চালকদের সচেতনতার জন্য বোর্ড বসানো হচ্ছে।”

তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সচেতনতামূলক বোর্ড থাকা সত্ত্বেও চালকরা গাড়ির গতি কমান না। এ ধরনের চালকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চ-র কর্মী, সদস্য-সদস্যারা।

শুধু হাওড়া নয়, হুগলিতে জলাজমির খড়িবনেও বাঘরোলের দেখা মেলে। পানের বরজে ব্যবহারের জন্য এই সব এলাকায় খড়িগাছের চাষ একসময় বেশ জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু পান চাষ মার খেতে থাকায় খড়ির ক্রমশ খড়ির চাহিদা কমেছে। বছর দশেক আগে বাংলাদেশে পান রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। তার পর থেকেই এই ব্যবসায় মন্দা নেমে এসেছে। তাই বাঘরোল বাঁচাতে পান ও খড়ি চাষের পুনরুজ্জীবনও দাবি তুলেছেন পরিবেশকর্মীরা।

খড়িবনের পাশাপাশি হোগলা বন এবং নিচু জলাজমিও বাঘরোলের আস্তানা। কিন্তু জলা বুজিয়ে যেভাবে প্রোমোটিংয়ের রমরমা চলছে, তাতে বাঘরোল বিপন্ন হয়ে উঠেছে।

spot_img
spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img