হো চি মিন
শ্যামল সান্যাল : দেখতে পাচ্ছেন কি, ওই যে..
কই তিনি, বলে কেটে পড়ছেন কেন মশাই..আরে গাছের ডালে ঢাকা পড়ে গেছে এক কোণে, হ্যাঁ, ওটাই তো সেই হো চি মিনের মূর্তি। রাস্তার নামটাও ওঁনার নামে। রোজ হাজার হাজার মানুষ, গাড়ি, বাস এইখান দিয়ে যায়। বিশাল অফিস পাড়া, ধনীদের ঠিকানা।
ওহ্, ঠিকই বলেছেন আমেরিকার কনস্যুলেট অফিসটা ওঁর প্রায় নাকের ডগায়। মার্কিন আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়েছিল ভিয়েতনাম সেদিন এই মানুষটির নেতৃত্বে। সেই মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী ইতিহাসে জ্বলজ্বল করে আছে।
সেদিন এই কলকাতায় দেওয়ালে লেখা হত,তোমার নাম আমার নাম, ভিয়েতনাম..ভিয়েতনাম। শ্লোগানে আছড়ে পড়ত ওই শব্দ। সেদিন কিছু মানুষ স্বপ্ন দেখতেন, এই দেশে বিপ্লব হবে। পাল্টে যাবে সমাজ ব্যবস্থা। চিনের মাও আমাদের চেয়ারম্যান হয়ে গিয়েছিলেন এক দল স্বপ্নে মজে থাকা বিপ্লবের ভাবনায় মশগুল মানুষের কাছে।
দু হাজার কুড়িতে হো বেঁচে থাকলে বয়স হত একশ একত্রিশ। ভিয়েতনাম আজও মার্কিন বিরোধী, কিন্তু বদলে যাওয়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেই দেশ আজ আধুনিক হলেও সাবেক নীতি থেকে সরে আসেনি। ভারতের সঙ্গে বন্ধুর সম্পর্ক। আর কলকাতার বামপন্থীদের সঙ্গে অতি ভালো সম্পর্ক আজও।
কি বলছেন, ওঁর বিষয়ে কলকাতা আজ উদাসীন, ক’জন জানে বা জানতে চায় ওই মানুষটিকে..?
হক কথা। বদলে যাওয়া দুনিয়াতে হো, লেনিন, মার্কস কি বাম রাজনীতি সবই বহুদূরের ঝাপসা ব্যাপার। টাকা হি ধর্ম কেবলমের যুগে ধনতন্ত্রবাদ জাঁকিয়ে ব্যবসা করছে দুনিয়া জুড়ে। কে খেয়াল রাখে ভিয়েতনামের বিপ্লবের কথা।
আজ ওঁর মূর্তিতে মালা দিলেন সিপিএমের দুই প্রবীণ নেতা বিমান বসু আর শ্যামল চক্রবর্তী। বয়সের ভারে ন্যুব্জ এই দুজন ছিলেন আগুনে ছাত্র নেতা, স্লোগান দিতেন, তোমার নাম আমার নাম, ভিয়েতনাম…।