ভারত মহাসাগরের বুকে গড়ে ওঠা ছোট্ট দেশ মালদ্বীপ। ভারতের লাক্ষা দ্বীপ থেকে মালদ্বীপের দূরত্ব মাত্র ৭০ নটিক্যাল মাইল। আর ভারতের পশ্চিম উপকূল থেকে দূরত্ব ৩০০ নটিক্যাল মাইলের মতো। ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের বন্ধুত্বের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। বলতে গেলে, দুদেশের সম্পর্ককে এক হিসেবে ঐতিহাসিকও বলা যেতে পারে।
ভারতের মতো এক সময় মালদ্বীপও ছিল ব্রিটিশদের দখলে। ১৯৬৫ সালে মালদ্বীপ ব্রিটিশদের কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে। তারপর থেকে বরাবরই দেশটির পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। স্বাধীনতার পর মালদ্বীপকে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল ভারতই। শুধু তাই নয়, রাজধানী মালেতে আবাসিক মিশনও খুলেছিল দিল্লি।
কলকাতায় নিযুক্ত মালদ্বীপের কনসাল রামকৃষ্ণ জয়সোয়াল বলেন, “ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের সম্পর্ক সবচেয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ। এই সম্পর্ক যে কতটা গভীর, করোনা-পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মালদ্বীপ সফর থেকেই তা স্পষ্ট।”
২০২০ সালের COVID-19 সঙ্কটের সময় মালদ্বীপের পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারত। ওই বছরের এপ্রিল মাসে, মালদ্বীপের সরকারের অনুরোধে, ভারতীয় বিমানবাহিনী ‘অপারেশন সঞ্জীবনী’ শুরু করে। মালদ্বীপে পৌঁছে দেওয়া হয় ২ টন প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং হাসপাতালের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী। পাঠানো হয়েছিল চিকিৎসকদের বিশেষ দল। পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল খাদ্যশস্যও।
রামকৃষ্ণ বলেন, “মালদ্বীপ বিশ্বশান্তিতে বিশ্বাসী। ভারতও শান্তির পূজারী। দুই দেশই সেই লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে।”
ভারত মহাসাগরে ১২০০টির মতো ছোটবড় দ্বীপ নিয়ে তৈরি এই দেশটি। অপরূপ সৌন্দর্যের সমুদ্রসৈকত আর বিলাসবহুল রিসর্টের জন্য দেশটি সুপরিচিত। ছোট দ্বীপগুলো বিশ্বের ধনী ও খ্যাতনামা ব্যক্তিদের অবকাশযাপনের ঠিকানা।
সাড়ে পাঁচ লক্ষের মতো মানুষের বাস। আয়তন প্রায় ২৯৮ বর্গ কিলোমিটার।
রামকৃষ্ণের কথায়, “ছোট বা বড় নয়, আসল কথা হল কাজ। মানুষের বিশ্বাস, ভাবনা। মালদ্বীপ ছোট দেশ হলেও, কাজের ক্ষেত্রে স্বাতন্ত্র্যের পরিচয় দিয়েছে।” শিক্ষাক্ষেত্রে ছোট এই দেশটির সাফল্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সাক্ষরতার হার প্রায় ১০০ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে মালদ্বীপে শিক্ষার হার সবচেয়ে বেশি।
ভারত এ পর্যন্ত মালদ্বীপে যেসব বড় প্রকল্প নিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে গ্রেটার মালে কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট, ভারতে মালদ্বীপের সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, কার্গো ভ্যাসেল সেবা, মালদ্বীপের জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর (এমএনডিএফ) সামর্থ্য বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণ, গুলহিফালহু পোর্ট প্রজেক্ট এবং হুলহুমালে ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মতো প্রকল্প।