উপলক্ষ দুর্গোৎসবের খুঁটিপুজো হলেও, সেখানে যেন নারীশক্তিরই আরাধনা। নিউ টাউনের প্রথম সর্বজনীন দুর্গাপুজো। বুধবার বিকেলে ছিল তাঁরই খুঁটিপুজো। আর পুজোর মন্ত্রোৎচারণ থেকে আনুষঙ্গিক অন্যান্য আচারবিধি, সব কিছুরই সম্পন্ন করার দায়িত্বে ছিলেন প্রমীলারা। পুজোর মাঝেই মঞ্চে চলছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানেও দুই নারী। আর গেটে দাঁড়িয়ে অতিথিদের যিনি স্বাগত জানাচ্ছেন, তিনিও নারী। গোটা পুজোরই দায়িত্বভার তাঁর কাঁধে। তিনি হলেন নিউটাউন সার্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতির সভানেত্রী ঊর্মিলা সেন। আর যাঁদের ঢাকের বাদ্যিতে পুজো প্রাঙ্গন সরগরম হয়ে উঠেছিল, তাঁরাও প্রমীলা বাহিনী। সব মিলিয়ে খুঁটি পুজো শুধুমাত্র নিছক পুজো ছিল না, দেবী দুর্গার আবাহনের আগে যেন নারীশক্তিরই আরাধনা হয়ে গেল।
নিউ টাউনের সিটি স্কোয়্যারে অনুষ্ঠিত খুঁটিপুজোয় হাজির হয়েছিলেন বিভিন্ন জগতের বিশিষ্টজনেরা। ছিলেন বন্ধন ব্যাঙ্কের প্রধান চন্দ্রশেখর ঘোষ, টেকনো ইন্ডিয়া গোষ্ঠীর কর্ণধার সত্যম রায়চৌধুরী, শিল্পপতি হর্ষবর্ধন নেউটিয়া, রাজারহাটের বিধায়ক তাপস চ্যাটার্জি, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী সহ আরও অনেকে। এই পুজোর মুখ্য উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছেন হিডকোর কর্তা তথা নিউ টাউনে গ্রিনসিটির রূপকার দেবাশিস সেন।
খুঁটি পুজোর ঐতিহ্য বহু প্রাচীন এবং এই আচারপালনের মধ্যে দিয়েই দুর্গাপুজোর সূচনা হয়। পুজোর প্যান্ডেল তৈরি শুরুর শুভক্ষণ এই খুঁটিপুজো দিয়েই শুরু।
ঊর্মিলা সেন বললেন, “আমরা খুব খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়েই চলেছি, তবু আমরা ভীষণভাবে আশাবাদী। দুর্গাপুজো আমাদের প্রাণের উৎসব, মননের উৎসব। বাধা, প্রতিকূলতা সত্বেও পুজো হবে না, এমনটি ভাবতেই পারি না। এই পুজোর মধ্যে দিয়েই আমরা বিশ্বজননীর কাছে সমস্ত মানুষের, বিশেষ করে নিউ টাউনের মানুষদের মঙ্গল এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করবো।”
এই দুর্গোৎসবের সাধারণ সম্পাদক সমরেশ দাস বলেন, “এই পুজো নিউটাউনে সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্যমণি হয়ে উঠুক, এটাই আমাদের কামনা। ভক্তি আর উৎসবকে একসূত্রে বেঁধে আমরা এমন এক সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এগোতে চাই, যা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, সংস্কৃতি নির্বিশেষে সমস্ত মানুষের মিলনভূমি হয়ে উঠবে।”