শ্যামল সান্যাল : বিচিত্র এই শহরের আনাচে-কানাচে কুয়াশা এই কার্তিককে একটু বেশি রহস্যময় করে তোলে। আধো অন্ধকারে কলকাতার বুকে টগবগ করে ঘোড়া আচমকাই দেখা যায়। একুশ শতকের শেষের সময়ে এই ছবিদর্শন চমকে দিতে পারে। অবাস্তব মনে হতে পারে। মকবুল ফিদা হুসেনর তুলিতে আঁকা কবিতা নাকি! সুরা পানের এফেক্ট! না, একেবারেই সত্যি ।
ইংরেজ শাসনের সময়ে গোরা সাহেবদের বাহন ছিল এরা। চাবুক চালিয়ে তারা দেশ শাসন করত ঐ টগবগে জীবটির পিঠে চড়ে। কলকাতা সেদিন ছিল দেশের রাজধানী। সে আরেক গল্প। সাহেবরা কবেই চলে গেছে! একসময়ের পরাধীন ভারত এখন একটা স্বাধীন দেশ। কিন্তু সেই যুগের অজস্র ছাপ পড়ে আছে আজও।
কলকাতা পুলিশের একটা বিভাগ আছে, ঘোড়-সওয়ার। শহরের বিভিন্ন জায়গায় আইনের শাসন বজায় রাখতে এরা ছুটে যায়, ভিড় হটাতে নাকি এরা খুবই কাজের।
বিকেলে এরা আস্তাবলে ফেরে চৌরঙ্গির ঝলমলে পথ ধরে। মানুষ সরে যায়। ওরা টগবগ করে দাপিয়ে রাজপথের ওপর দিয়ে চলে, থমকে দাঁড়ায় কল্লোলিনী কলকাতা।
এই শহরের কত কথাই না জানা আজকেও। কলকাতার গোপন কথা ছড়িয়ে ওখানে সেখানে। রহস্যময় বাউলের মতো এই কলকাতা।একতারা কখন বাজে, কেউ তা জানে না ।
(ক্রমশঃ)
ছবি : শ্যামল সান্যাল