বিধানসভার চেয়ে ভোটের হার বাড়িয়ে বিপুলভাবে জিতে ফের কলকাতা পুরসভার দখল নিল তৃণমূল কংগ্রেস। পুরসভার ১৪৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল একাই পেয়েছে ১৩৪টি। এছাড়া, বিজেপি ৩, বামফ্রন্ট ২, কংগ্রেস ২ এবং নির্দল প্রার্থীরা জিতেছেন ৩টি ওয়ার্ডে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৫৭.৫৫ শতাংশ। মঙ্গলবার রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, পুরভোটে তা বেড়ে হয়েছে ৭২ শতাংশ। অর্থাৎ বিধানসভা ভোটের পর মাত্র ৮ মাসের মধ্যে তৃণমূলের ভোট বেড়েছে ১৫ শতাংশ, যা এককথায় নজিরবিহীন।
২০১৫-র পুরভোটে কলকাতায় তৃণমূল পেয়েছিল ৫০.৬ শতাংশ ভোট। সেই হিসাবে এ বার ভোটের হার বেড়েছে ২০ শতাংশের বেশি।
২৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কলকাতার মহারাষ্ট্র নিবাস হলে দলের জয়ী কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেই মেয়রের নাম চূড়ান্ত করা হবে।
এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য দিক হল, বিজেপিকে সরিয়ে বামেদের দুই নম্বরে উঠে আসা। ১৪৪টির মধ্যে ৬৫টি ওয়ার্ডে দুই নম্বরে রয়েছে বামেরা। আর বিজেপি ৪৫টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় হয়েছে। কংগ্রেস দ্বিতীয় হয়েছে ১৫টি ওয়ার্ডে।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর থেকেই বাম-কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছিল বিজেপি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একটি আসনেও জিততে পারেনি বাম-কংগ্রেস।
ষকলকাতার পুরভোটে বামেদের উত্থান যেমন চমকপ্রদ, তেমনই এই নির্বাচনে বড়সড় ধাক্কা খেল বিজেপি। ২০১৯-এর লোকসভার নির্বাচনের পর থেকে এই যেভাবে এগোচ্ছিল, পুরভোটে তার ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না। ২০১০ সালে কলকাতায় তিনটি ওয়ার্ডে জিতেছিল বিজেপি। ২০১৫তে তা সাতে উঠেলেও, এবার আবার তিনেই রইল বিজেপি ২০২১ সালে এসে ফের সেই তিনেই বিজেপি।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের কলকাতার ২২টি ওয়ার্ডে দল এগিয়ে ছিল গেরুয়া শিবির।কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে ২২টি ওয়ার্ড কমে হয়ে যায় ১২।
দলত্যাগের পরে রাজ্যে এখন বিজেপির ১৭ জন লোকসভার সাংসদ ও ৭০ জন বিধায়ক রয়েছেন। সেই তুলনায় পুরভোটের এই ফল তাদের কাছে এক বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা।