আমফানের দুঃস্বপ্ন এখনও কাটেনি। এক বছরের মাথায় এবার হাজির ‘ইয়াস’, যা আবার সুন্দরবনবাসীর রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। প্রকৃতির সঙ্গে নিরন্তর লড়াই করে বেঁচে থাকা এখানকার মানুষ প্রমাদ গুনতে শুরু করেছেন। তাঁদের জন্য আবার কী বিভীষিকা অপেক্ষা করছে, কে জানে? প্রকৃতির অভিশাপে আবার সব লন্ডভন্ড হয়ে যাবে না তো? ঘুরেফিরে আসছে এই সব প্রশ্ন।
তবে ঝড়ের মোকাবিলায় প্রশাসনিক মহলে জোর তৎপরতা চলছে। নবান্নের নির্দেশে ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সবকিছু তদারকি করছেন এখানকার ভূমিপুত্র সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম চন্দ্র হাজরা। এবারই প্রথম মন্ত্রী হয়েছেন। তবে দীর্ঘদিনের এই বিধায়ক সুন্দরবনকে চেনেন একেবারে হাতের তালুর মতো।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় শুক্রবার তিনি কাকদ্বীপ মহকুমার শাসকের কার্যালয়ে একটি জরুরি বৈঠক করেন। শনিবার ক্যানিংয় মহকুমা শাসকের অফিসে আরও একটি বৈঠক করেন বঙ্কিমবাবু। করোনা সংক্রমণে মধ্যে বিধি মেনে কী করে দুর্গত মানুষকে ত্রাণ শিবিরে রাখা যেতে পারে, তা নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হয়।
সেইসঙ্গে নদীবাঁধ মেরামতিতে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গোসাবা, নামখানা, পাথরপ্রতিমা সহ বিভিন্ন এলাকায় দ্রুত গতিতে নদীবাঁধ মেরামতির কাজ চলছে।
বাসন্তী, কাকদ্বীপ, সাগর, গোসাবা এবং ডায়মন্ড হারবারে ইতিমধ্যে পৌঁছে গিয়েছেন অসামরিক প্রতিরক্ষা এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। তাঁরা কাজেও নেমে পড়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে।
বিভিন্ন এলাকায় যাতে দ্রুত ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া যায়, সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা বলেন, “এক হাজারের বেশি আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বহু দোতলা স্কুল, কলেজ, বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্র এবং কর্মতীর্থ ভবনগুলি।”
তিনি জানান, “প্রতিটি আশ্রয়স্থলে করোনা বিধি মেনে ৫০ জন করে দুর্গত মানুষকে রাখা হবে। সেখানে পর্যাপ্ত জল, ওষুধ এবং জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রে বা কাছাকাছি এলাকায় থাকছে অ্যাম্বুল্যান্সও।”