(CRIME REPORTER : এই পর্বে শোনানো হবে নানান অপরাধ কাহিনী। বিভিন্ন রহস্যজনক ঘটনার নেপথ্য কাহিনী। বিখ্যাত গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর তদন্তের রোমহর্ষক গল্প। বিভিন্ন দেশের গুপ্তচর সংস্থাগুলোর গোপনে খবর সংগ্রহের গল্প আড্ডার মত করে উঠে আসবে বিশিষ্ট সাংবাদিক হীরক কর -এর কলমে।)
হীরক কর : দুটি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে ব্যবধান দেড়শো বছরেরও বেশি। স্বাভাবিকভাবেই কেউ কারোর পরিচিত ছিলেন না। অথচ কতই না মিল তাদের মধ্যে! শুধুই কি কাকতালীয় ব্যাপার? নাকি এর পিছনেও লুকিয়ে অন্য কোনও রহস্য ? কে জানে ?
কাহিনীর কেন্দ্রীয় চরিত্র মোট দুজন, মেরি অ্যাশফোর্ড এবং বারবারা ফরেস্ট। সম্পূর্ণ ভিন্ন দুই শতকের দুই মহিলা। জন্ম-মৃত্যুর ফারাকও প্রায় ১৫৭ বছরের। দুজনের চরিত্র, ভাবনা-চিন্তা বা সামাজিক প্রেক্ষাপটও প্রায় আলাদা। অথচ এই দুজনের মধ্যেই রয়েছে এক কাকতালীয় মিল!
এবার প্রশ্ন হচ্ছে এই দুজনের মধ্যে মিলটা ঠিক কোথায় ? মেরি এবং বারবারা দুজনের জন্ম এবং মৃত্যুদিন এক ! অবাক হওয়ার মতো বিষয় কিন্তু এটা নয়। এরকম তো কত জনেরই হতে পারে। কিন্তু যদি বলি দুজনের মৃত্যুও ঘটেছে প্রায় একই উপায়ে ? তখন ? ঘটনাচক্রে দুজনকেই হত্যা করা হয়েছিল এবং আলাদা দুই খুনির নামও এক ! হ্যাঁ, ভুল পড়ছেন না। ঠিকই পড়লেন। কি ? এবার আশ্চর্য হলেন তো?
অবাক হওয়ার মতো আরও বিষয় বাকি রয়েছে। মৃত্যুকালে দুজনেরই বয়স ছিল ২০। যেদিন তাঁদের মৃত্যু হয়, সেদিন দুজনই ছিলেন এক জন্মদিনের পার্টিতে। মৃত্যুর আগে দুজনকেই ধর্ষণ করা হয় এবং হত্যার পর দুজনের মৃতদেহই ব্রিটেনের পাইপ হেস (Pype Hayes) পার্ক থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। শোনা যায় মৃত্যুর ঠিক আগে এরা দুজনই অশুভ কিছুর আন্দাজ পেয়েছিলেন।
১৮১৭ সালের ২৭ মে মেরিকে হত্যা করেন তাঁরই প্রেমিক আব্রাহাম থর্নটন। ঠিক একই পদ্ধতিতে ১৯৭৪-এর ২৭ মে বারবারা ফরেস্টকেও হত্যা করে তাঁরই পরিচিত এক ব্যক্তি। খুনির নাম ? সেই থর্নটন, মাইকেল ইয়ান থর্নটন। দুটি ক্ষেত্রেই উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে হত্যাকারীদের কোনওরকম শাস্তিই হয়নি।
সত্যিই কি এই মিল শুধুই কাকতালীয়? সে রহস্য রয়ে গিয়েছে সেই তিমিরেই। তবে আজও বছর কুড়ির একা কোনও মেয়ে পাইপ হেস পার্কের সেই রাস্তা এড়িয়ে চলেন। বারবারা এবং মেরি দুই ভিন্ন ব্যক্তিত্বের মহিলা হলেও, এই মিলের কারণেই আজ ইতিহাস খুঁজলে মেলে দুজনের নাম। আর তাঁদের হত্যার ঘটনাগুলো আজও অমীমাংসিত রহস্যের এক দলিল হিসেবে ভাবিয়ে তোলে সারা পৃথিবীর মানুষকেই।