বিতর্ককে পিছনে ফেলে ৪৬ বছর পর অবশেষে খোলা হল পুরীর রত্নভাণ্ডারের দরজা। চাবি না পেয়ে তালা ভেঙেই রত্নভান্ডারের ভিতরের কক্ষে প্রবেশ করেন ১১ সদস্যের কমিটি। রবিবার ‘পবিত্র মুহূর্ত’ দুপুর ১টা বেজে ২৮ মিনিটে দ্বাদশ শতকের পুরনো এই মন্দিরের রত্নভাণ্ডারের দরজা খোলা হয়। তার পর থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত অর্থাৎ ৪ ঘণ্টা ধরে রত্নভান্ডারের ভিতরেই ছিলেন কমিটির সদস্যরা।
বাইরের রত্নকক্ষে থাকা অলঙ্কারসামগ্রী সিন্দুকে ভরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় মন্দির চত্বরে অস্থায়ীভাবে তৈরি একটি সুরক্ষিত ‘ভল্টে’।
মন্দির সূত্রে জানা গেছে, ভিতরের রত্নকক্ষের একটি তালা না খোলায়, শেষ পর্যন্ত তালা ভেঙেই ভিতরে প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত নেন বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যেরা। তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই ভিতর থেকে ঝাঁক ঝাঁক বাদুড় বেরিয়ে আসে।
তলব করা হয়েছিল সর্প বিশেষজ্ঞদেরও। তাঁরা ভিতরে গিয়ে পরীক্ষা করে রত্নকক্ষটিকে ‘নিরাপদ’ বলার পরেই ভিতরের রত্নকক্ষে প্রবেশ করেন কমিটির সদস্যরা।
তবে সময় না থাকায় ভিতরের কক্ষের কাজ খুব একটা এগোয়নি। তাই ওই কাজের জন্য অন্য একটি দিন স্থির করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কী কী রয়েছে রত্নকক্ষটিতে? বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ওড়িশার রাজা অনঙ্গভীম দেব জগন্নাথদেবের অলঙ্কার তৈরির জন্য মন্দির কর্তৃপক্ষকে প্রায় দেড় হাজার কেজি সোনা দিয়েছিলেন, যা এই রত্নভান্ডারে থাকার কথা।
শুধু বাইরের প্রকোষ্ঠেই রয়েছে জগন্নাথের একটি সোনার মুকুট এবং তিনটি সোনার হরিদকণ্ঠী মালা। প্রত্যেকটি তৈরি হয়েছে ১২০ তোলা অর্থাৎ ১৪০০ গ্রাম (প্রায় দেড় কেজি) সোনা দিয়ে।
জগন্নাথদেব এবং বলভদ্রের সোনার শ্রীভুজ বা হাত এবং শ্রীপয়ার বা পা-ও রয়েছে রত্নভান্ডারে।
ভিতরের রত্নকক্ষে রয়েছে ৭৪টি সোনার গয়না। প্রত্যেকটির ওজন কমপক্ষে ১ কেজি করে।
এ ছাড়া রয়েছে সোনা, হিরে, প্রবাল, মুক্তো দিয়ে তৈরি ‘প্লেট’। ১৪০টি ভারী রূপার গয়নাও রয়েছে মন্দিরের ভিতরের রত্নকক্ষে।