আইপিএলে (IPL) শেষ ওভারে জয়ের জন্য কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) দরকার ছিল ২৯ রান। শেষ ওভারে পরপর ৫টি ছয় মেরে কলকাতাকে রুদ্ধশ্বাস জয় এনে দেন রিঙ্কু সিং (Rinku Singh)। আর সেই সুবাদে রিঙ্কুর নাম এখন মুখে মুখে ঘুরছে।
উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের সন্তান বছর পঁচিশের রিঙ্কুকে গত বছর ২০২২ আইপিএলে ৫৫ লাখ টাকায় কিনেছিল কেকেআর। সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করেছিলেন তিনি। প্রথম থেকে যে কটি ম্যাচে তাঁকে প্রথম একাদশে রাখা হয়েছে, তার সবকটিতেই কিছু না কিছু করে দেখিয়েছেন। কখনও ভাল ক্যাচ নিয়েছেন, কখনও নজর কেড়েছেন ব্যাটিংয়ে। রাজস্থান রয়ালসের বিরুদ্ধে সোমবারের ম্যাচে তো রিঙ্কুই সেরার সেরা।
এবারের আইপিএলে কলকাতা তাঁকে কিনেছিল ৮০ লাখে। এর আগে ২০১৮তেও কেকেআর তাঁকে ৮০ লাখ টাকায় কিনেছিল। কিন্তু সেবার খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। তবুও পরের বছরও তাঁকে দলে রেখে দিয়েছিল কলকাতা। এর আগে ২০১৭তে তিনি ছিলেন পাঞ্জাব দলে।
আজকের সাফল্য রিঙ্কুকে আগামী দিনে উত্তোরণের পথে নিয়ে যাবে। তবে এই দিনটির জন্য তাঁকে কম লড়াই করতে হয়নি। অপেক্ষা করতে হয়েছে পাঁচ পাঁচটি বছর। অবশেষে আইপিএলের চলতি সিজনে শ্রেয়স আইয়ারের দলে সুযোগ পেয়েছেন বাঁ হাতি এই ব্যাটসম্যান। আর সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করছেন শুরু থেকেই।
হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম রিঙ্কুর। ৫ ভাইবোন মিলিয়ে পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৯। ক্লাস নাইনে ফেল করার পর পড়াশোনা আর এগোয়নি। ক্রিকেটই হয়ে ওঠে তাঁর ধ্যানজ্ঞান। আজকের এই জয় শুধু কেকেআর সমর্থক নয়, হাসি ফুটিয়েছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের মুখেও।
এক সাক্ষাৎকারে রিঙ্কু জানিয়েছেন, তাঁর বাবা বাড়ি বাড়ি গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছে দেন। দাদা অটো চালান। দাদার সেই অটো নিজেও চালিয়েছেন রিঙ্কু। কাজ করেছেন ঝাড়ুদার হিসেবেও কাজ করেছেন একসময়। এভাবেই দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছেন। রিঙ্কুর কথায়, “জীবনে অনেক কষ্ট করেছি, এখন হয়তো ভগবান সেসব দিনের হিসেব পুষিয়ে দিচ্ছেন।”