মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় আজ নতুন অধ্যায় যুক্ত হল। যাত্রা শুরু হল জেআইএস স্কুল অফ মেডিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড রিসার্চ। ধনধান্য অডিটোরিয়াম থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে পিপিপি (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ) মডেলে গড়ে ওঠা এই হাসপাতালের যাত্রার সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
১৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে গড়ে ওঠা এই হাসপাতালে বছরে ১৫০ জন ছাত্রছাত্রী এমবিবিএস পাঠক্রমে পড়ার সুযোগ পাবেন। চলতি বছর থেকেই এই পাঠক্রম চালু হয়ে যাচ্ছে।
৩০ একর জমির ওপর তৈরি এই হাসপাতালে ১২০০টি আধুনিক মানের শয্যা থাকছে। আধুনিক মেডিক্যাল পরিকাঠামো সহ থাকছে ২০টি ব্লক।
অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করে জেআইএস গোষ্ঠীর ম্যানেজিং ডিরেক্টর তরণজিৎ সিং বলেন, “আমরা এবার ডাক্তারি পঠনপাঠনের জগতে পা রাখলাম। এখানে আধুনিক পরিকাঠামোর মধ্যে থেকে মেধাবী পড়ুয়ারা ডাক্তারি শিক্ষার পাঠ নিতে পারবেন। আমাদের লক্ষ্য হল, একে একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা। রাজ্য সরকারের সহায়তায় পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য পরিষেবায় আমরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারবো বলে আশা রাখি।”
সর্দার তরণজিৎ সিং বলেন, এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সর্দার যোধ সিংয়ের স্বপ্ন পূরণ হল। প্রয়াত সর্দার যোধ সিং হলেন জেআইএস গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা এবং তরণজিতের পিতা। দেশভাগের পর ভারতের পাঞ্জাবে চলে এসেছিলেন যোধ সিংয়ের পরিবার। জীবিকার তাড়নায় যোধ সিং চলে আসেন এই বাংলায়।একটি-দু’টি গরু দিয়ে শুরু করে প্রথমে ডেয়ারির ব্যবসা শুরু করেন। সেই ব্যবসায় সাফল্যের পর তথ্যপ্রযুক্তি, ট্রান্সপোর্ট, ইনফ্রাস্ট্রাকচার, আয়রন অ্যান্ড স্টিল, কার্গো প্রভৃতি ক্ষেত্রেও একে একে জেআইএস গ্রুপের নাম ছড়াতে থাকে। তবে বাংলায় শিক্ষাজগতে বর্তমানে জেআইএস একটি উল্লেখযোগ্য নাম। এখন জেআইএস-এর অধীনে রয়েছে ৩৭টির বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৩৭ হাজারের বেশি পড়ুয়া এবং ১৭০টির বেশি প্রোগ্রাম।
তরণজিতের দাবি অনুযায়ী, “বাংলার সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি এখন জেআইএস গ্রুপের অধীনে রয়েছে। এবার মেডিক্যাল কলেজ ও চিকিৎসা গবেষণায় আমরা পদার্পণ করলাম।” উপযুক্ত জায়গা সময়মতো না মেলার কারণে মেডিক্যাল কলেজ চালু করতে কিছুটা দেরি হল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী অরূপ রায়, জেআইএস গ্রুপের ট্রাস্টি সর্দারনি হরমিত কৌর, ডিরেক্টর সিমরপ্রীত সিং, জেআইএস গ্রুপের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার বিদ্যুৎ মজুমদার প্রমুখ।