বৃষ্টি দে: করোনার আতঙ্কে জীবন যখন পানসে হয়ে উঠছে, ক্রমাগত তখন স্মৃতির পাতায় সময় অসময়ে ভেসে ওঠে একটাই ছবি। পাহাড়! সে যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে আর বলছে, কি রে আসবি না? তোদের চোখ দিয়েই না আমি আমার সৌন্দর্যের পরখ করি!
আমি বলি , কি করি বলত, মন যে চায়! কিন্তু পারছি কই? আহা যদি ডানা থাকত আমার! চোখের পাতা জুড়ে ভেসে ওঠে সেই দিগন্ত বিস্তৃত পাহাড় শ্রেণী। ট্রেনটা শিয়ালদহ স্টেশন ছেড়ে যখন একটু একটু করে কলকাতা ছাড়ছিল তখন মন আমার ভেসে গেছিল সেই সুদূর পানে, যেখানে রাত পোহালেই পৌঁছব।
সেবার আমাদের গন্তব্য ছিল আরিতার। আগের ব্যবস্থা মত স্টেশনে হাজির ছিল গাড়ি সহ তার চালক। উঠে বসলাম। চলতে শুরু করল গাড়ি। আরিতার- এক অদ্ভূত মিষ্টি নাম। এন জে পি থেকে প্রায় ৫-৬ঘন্টার বেশি সময় আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে সবুজ রঙের জলে মোড়া তিস্তা সুন্দরীকে পাশে নিয়ে এলাম সেই আরিতারে। ছোট্ট এক সুন্দর গ্রাম। একটা বছর পেরিয়ে এসেও সেই সুন্দরীকে ভোলা সম্ভব হয়নি আমার আজও।
যে হোটেলে উঠেছিলাম তা ছোটখাট। ছটা রুম হবে হয়ত। কিন্তু এত উঁচুতে এমন এক পাহাড়ি গ্রামে যে এত আধুনিক জীবন কাটাতে পারব , তা সত্যি আমি ভাবিনি। পৌঁছে গিয়ে ভাত পেলাম না, কিন্তু আন্টি যিনি সব দেখাশোনা করেন, দ্রুত বানিয়ে দিলেন চাউমিন। পেট ভরে খেয়ে ফুরফুরে মনে গ্রাম দেখতে বেরোলাম। তবে মাত্র আড়াই পাক। এর বেশী ক্ষমতা আমার কেন আমার চোদ্দ বছরের মেয়ের ও নেই। পরের দিন শুধু দেখলাম আরিতার আর তার চারপাশ।
চারপাশ বলতে আছে কয়েকটি মনাস্ট্রি। আছে আরিতার লামপোখারী লেক। প্রকৃতির কোলে সবুজ জলে মোড়া এই লেক আপনাকে ভরিয়ে দেবে এক অদ্ভুত ভালোলাগায়। বোটিং করবেন, মোমো খাবেন তারপর আবার চলতে শুরু করবেন। এই ট্রিপের সঙ্গে যুক্ত করে নিতে পারেন সিল্ক রুট যাওয়া। আবার শুধু একটু নিরিবিলিতে কদিন কাটাতে চান যদি এর থেকে আদর্শ পাহাড়ি গ্রাম আর একটিও পাবেন না।
আমরা যেখানে ছিলাম সেই অরেঞ্জ কোর্ট রিসর্টটাও যেন আমাদের জন্য তৈরি হয়েছিল।
যোগাযোগ:
ARITAR // Karma Dawa Sherpa
[Mobile] +919933110033
West Bengal, India