হোমরাজ্যঅমিত-বিক্রমে হারলো বিজেপি

অমিত-বিক্রমে হারলো বিজেপি

অমিত-বিক্রমে হারলো বিজেপি

শ্যামল সান্যাল : এই হেডলাইনটা পাঠিয়েছে দু’দশকের লন্ডন প্রবাসী আমাদের কলকাতার এক বন্ধু। অমিত শাহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিজেপির বিশাল নেতা। এই বঙ্গে প্রায় ডেইলি প্যাসেঞ্জার হয়ে গিয়েছিলেন। সঙ্গী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। অমিত হুঙ্কার দিয়েছিলেন, “এহি সরকার কো উখার কে ফেক দো।”

মোদি আর তাঁর সব সখারা “সুনার বাংলা” গড়ে দেবার অলীক স্বপ্ন ফেরি করেছিলেন হিন্দি ভাষায় ।
মোদি নিয়ম করে “দিদি, ও দিদি” বলে হেলিকপ্টারে চষে ফেলেছেন এই রাজ্যটাকে।

খবরের কাগজ, বিভিন্ন চ্যানেলে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছিলো গেরুয়া শিবির, যেন বিজেপি ক্ষমতায় এসেই গেছে!ভোট পরবর্তী সমীক্ষায় ইঙ্গিত মিলেছিল বিজেপির দাবি ভুল।

রবিবারে সরকারি ভাবেই ওই নির্বাচন কমিশন বিজেপিকে বলে দিল, “বাপি বাড়ি যাও”। শব্দটা সৌরভ গাঙ্গুলি ছক্কা হাঁকিয়ে বলতেন। সৌরভকে অনেক টানাটানি করেও বিজেপি খেলতে নামাতে পারেনি। উনি তো দেশের সব থেকে সফল ও বুদ্ধিমান ক্যাপ্টেন ছিলেন। কলকাতার মহারাজ নিশ্চিত জানতেন, খেলার ফল কী হতে পারে। এর ফলে বিজেপি আর মুখ্যমন্ত্রীর পেলো না।

এই ভোটে ঠিক হয়ে গেল, বিজেপি গোটা দেশেই গভীর সঙ্কটে পড়ে গেল। আসামটা কোনওরকমে জুটল। কেরালা, তামিলনাড়ু হাতছাড়া। হাতে ভাঙা পেন্সিল পুদুচেরি। পরের লোকসভা ভোটে বিজেপি নাকানি চোবানি খাবে, তা একরকম পরিষ্কার।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মোদীর ঘাড়ে এই বিপর্যয়ের দায় চাপিয়ে আরএসএস এবং দলের একটা প্রভাবশালী অংশ তাঁকে কাঠগড়ায় তোলার জন্য অতি সক্রিয় হয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। অন্য দিকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে দেশে একটা তৃতীয় শক্তি উঠে এসে দেশের রাজনৈতিক চালচিত্র বদলে দিতে পারে।

এখন বিজেপিতে চলে যাওয়া বহু তৃণমূল নেতা কর্মীরা কালীঘাটে লাইন লাগাবেন, এটাও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের খবর। দলের নেতৃত্ব এ বিষয়ে জানেন। তবে তাঁরা এবারে কঠোর মনোভাব নিতে চান।

নবান্নে হ্যাটট্রিক করে মমতা ব্যানার্জি মুখ্যমন্ত্রী হয়ে বসার সময়ে বেশ কিছু পুরনো মুখের বাদ পড়ার সম্ভাবনা। নতুন তরুণ ও বেশি মহিলা মন্ত্ৰী দেখা যাবে। বেশ কিছু পুলিশ, আমলার অদলবদল হবে। বিজেপির কিছু নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে নতুন সরকার কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে।

তবে নতুন সরকারের এখন প্রধান লক্ষ্য হবে করোনার মোকাবিলা। এই লক্ষ্যে মমতা সরকার সর্বশক্তি নিয়ে যুদ্ধে নেমে পড়বে। তার জন্য পরিকল্পনা তৈরি। সরকারের শপথ নেবার অপেক্ষা।
এই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। অবশ্য সেই ঘন ঘন টুইট করা ধনখড় আজ মমতার কৃপার পাত্র হয়ে কতদিন আর থাকবেন, সেটা নজর করার বিষয়।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img