হোমদেশব্ল্যাক ফাঙ্গাস : এই লক্ষণগুলি দেখলেই সতর্ক হোন

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস : এই লক্ষণগুলি দেখলেই সতর্ক হোন

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস : এই লক্ষণগুলি দেখলেই সতর্ক হোন

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কাঁপছে দেশ। এর মধ্যে করোনার দোসর হয়ে হাজির আরেক মারণব্যাধি ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ বা কালো ছত্রাক। গুজরাট, রাজস্থান, কর্নাটক, রাজস্থান, উত্তরাখন্ড, তেলেঙ্গনা, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা, বিহার সহ দেশের রাজ্যে রাজ্যে দ্রুত ছড়াচ্ছে এই রোগ। পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যে এই রোগে মৃত্যু হয়েছে এক তরুণীর।
কালো ছত্রাক বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিস বাতাসেই মজুত থাকে।

রোগের লক্ষণ বুঝবেন কীভাবে?
আইসিএমআর জানাচ্ছে, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর নীচের এই লক্ষণগুলি দেখা গেলে, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

জ্বর, সাইনাসের যন্ত্রণা, মাথার একটা নির্দিষ্ট দিক যন্ত্রণা, একদিকের নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, মুখে ফোলা ভাব, দাঁতের যন্ত্রণা, দাঁত পড়ে যাওয়া। এছাড়া ঝাপসা দৃষ্টি, নাকের টিস্যু ফ্যাকাসে বা কালো হয়ে যাওয়া, মুখের ভিতর কালো হয়ে যাওয়া।

কীভাবে শরীরে সংক্রমণ ছড়ায়?
এই ফাঙ্গাস বাতাসে ভেসে থাকে। নাক, সাইনাস এবং ফুসফুসের মাধ্যমে ছড়ায়। দেহের কোনও অংশ কাটা বা পোড়া থাকলে, তার মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে এই ছত্রাক। তবে কাটা বা পোড়া অংশ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করলে, লোকাল ইনফেকশন হয়। তা অবশ্য ততটা মারাত্মক হয় না।

কিন্তু সাইনাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে,
ধীরে ধীরে তা চোখ এবং মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে। মস্তিষ্কে পৌঁছানোর পর এই ফাঙ্গাস ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। আর নাক দিয়ে ঢুকে ফুসফুসে প্রবেশ করলে পালমোনারী মিউকরমাইকোসিস তৈরি করে।

এইমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়ার মতে, করোনা চিকিৎসায় স্টেরয়েডের যথেচ্ছ ব্যবহার, সস্তা স্টেরয়েডের ব্যবহার, সুগার লেবেল বেড়ে যাওয়া, অক্সিজেন সিলিন্ডারের ফ্লো মিটারে অর্ডিনারী ট্যাপ ওয়াটারের ব্যবহারের ফলে এই রোগ বেশি ছড়াচ্ছে। এছাড়া, করোনা রোগীদের ইমিউনিটি কমে যাওয়া এই রোগের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন গুলেরিয়া।

৬ বছরের কম বয়সী ডায়াবেটিস রোগী, সদ্য কোভিড থেকে সেরে ওঠা রোগীরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, টিস্যু বায়োপসি করে এই রোগ নির্ণয় করা যেতে পারে।

প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা না পড়লে, এই ফাঙ্গাস শরীরের বিভিন্ন অংশের ক্ষতি করে। শরীরের যে সব অংশে এই ফাঙ্গাস, সেখানে অপারেশন করে এই ছত্রাক দূর করতে হবে। বেশ কিছু রোগী চোখ হারিয়েছেন। অনেক মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

মৃত্যুর হার ৮০ শতাংশ। ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে, মৃত্যু হার কমে ৪০-৫০ শতাংশ হতে পারে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এই রোগে যে সব ওষুধ ব্যবহার করা হয়, তাতে ভবিষ্যতে কিডনি নষ্ট, স্নায়ুরোগ এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

এই রোগের চিকিৎসায় Lipsomal Amphotericin B ব্যবহার করছেন ডাক্তাররা। রোগীপিছু প্রায় ২০টা ভায়াল প্রয়োজন। এক একটি ভায়ালের দাম প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা। বাজারে এই ওষুধ সহজলভ্য নয়। এছাড়াও Posaconazole এবং Isavuconazole ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই রোগের ওষুধ খাবেন না।

কী কী সতর্কতা প্রয়োজন?
১. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা
২. ঘর পরিষ্কার রাখা
৩. বাগানে কাজ করলে, ফুল হাতা জামা প্যান্ট পরা।
জুতো ও গ্লাভস ব্যবহার।
৪. মাস্ক ব্যবহার।
৫. কোথাও কেটে বা পুড়ে গেলে, সাবান জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
৬. নোংরা জায়গায় যাতায়াত এড়িয়ে চলা।
৭. হাত পায়ের নখ কেটে পরিষ্কার রাখা।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img