হোমকলকাতাCoffee House : কফি হাউসের আড্ডার ইতিকথা

Coffee House : কফি হাউসের আড্ডার ইতিকথা

Coffee House : কফি হাউসের আড্ডার ইতিকথা

দেবাস্মিতা ঘোষ
কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর না থাকলেও, এখানে এখনও রোজ বসে নিত্য নতুন হাজার আড্ডার আসর।

যুগে যুগে বাংলার ছাত্র যুব সমাজের প্রাণকেন্দ্র কলেজ স্ট্রিটের এই কফি হাউস। বই পাড়ার মতই কলেজ স্ট্রিটের মুকুটে আরেকটি মুকুটমণি হলো কফি হাউস। শুধু বাংলারই নয়, সারা বিশ্বের শিল্পী, সাহিত্যিক, চিত্রকর, ভাস্কর, পরিচালক, অধ্যাপক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবীদের চিন্তনের গোড়ায় জল দিয়েছে এখানকার কফি।

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটর উল্টো দিকে ১৫ নম্বর বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিটের কফি হাউসে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা অব্দি বসে কফির আসর। সঙ্গে থাকে রকমারি সুস্বাদু স্ন্যাক্স।

ইন্ডিয়ান কফি হাউসের শাখাগুলির মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় এই শাখাটির জন্ম হয় ১৯৪২ সালে, অ্যালবার্ট হলে। পরবর্তীকালে ১৯৪৭ সালে ভারত সরকার এর নামকরণ করে “কফি হাউস”। এটিই আজকের “কলেজ স্ট্রিট কফি হাউস”। 1958 সালে কর্তৃপক্ষ এই কফি হাউস বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপকদের সরকারের কাছে জমা দেওয়া বিশেষ পিটিশনের ফলে একই বছরে আবার খোলা হয় কফি হাউস। গত বছর মহামারীর কারণে ১০৩ দিন বন্ধ রাখার পর এ বছর আবার খোলা হয়েছে কফি হাউস।

কফি হাউসের নিয়মিত খদ্দের ছিলেন ঋত্বিক ঘটক, নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সুখময় চক্রবর্তী, তপন রায়চৌধুরী, সত্যজিৎ রায়,বরুণ দে, সুমিত সরকার, অমর্ত্য সেন, মৃণাল সেন, অপর্ণা সেন প্রমুখ প্রতিথযশা ব্যক্তিত্বরা। এছাড়াও রয়েছে আরো শত শত নাম। ষাটের দশকে হাংগ্রি মুভমেন্টের সময় রণক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছিল কফি হাউস।

আন্দোলনের জনক মলয় ও সমীর রায় চৌধুরী ভাতৃদ্বয়ের নিয়মিত আনাগোনা ছিল এখানে। বহু সাহিত্য পত্রিকার সূতিকাগার এই কফি হাউসের আড্ডা। বহু চলচ্চিত্রেও জায়গা করে নিয়েছে কফি হাউস। ডিটেক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সীর শুটিং হয়েছে এখানে।

ইনট্যাক-এর “হেরিটেজ” শিরোপা কফি হাউসের অলঙ্কার নাকি উল্টোটা, সেটাই বিচার্য। কলকাতা তথা বাংলার অস্মিতা কফি হাইস। তার আড্ডারা চিরজীবী।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img