করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তে বাজারে ওষুধ, অক্সিজেনের হাহাকার চরমে উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে কালোবাজারির। এই অবস্থায় বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদের দাবি, মাত্র ১০ টাকা খরচ করে তিনটি ওষুধ খেলেই করোনাকে বাগে আনা সম্ভব।
কী সেই ওষুধ?
এই তিনটি হোমিওপ্যাথি ওষুধ হল, আর্সেনিকাম অ্যালবাম, ফসফরাস, টিউবারকুলিনাম। দ্রুত এই ওষুধ ব্যবহারের আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি দিয়েছেন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকরা।
কীভাবে খেতে হবে ওষুধ?
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, প্রথম ৩ দিন আর্সেনিকাম অ্যালবাম খালি পেটে খেতে হবে। এর ১৫ দিন পর টানা ৩ দিন খেতে হবে ফসফরাস ৩০। ১৫ দিন পর খেতে হবে টিউবারকুলিনাম (দুটি ডোজ, চারটে করে দানা)। ১৫ দিন পর টিউবার কুলিনাম ওয়ান এম (১টা ডোজ, ১ দিন) এবং আরও ১৫ দিন পর টিউবারকুলিনাম টেন এম (১টা ডোজ, ১ দিন)।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে করোনা চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথিক প্রোটোকল তৈরি হলেও, বাংলায় এখনও হয়নি। দ্য হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল এসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার রাজ্য শাখার দাবি, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার এপিটি প্রোটোকলের মাধ্যমে মাত্র ১০ টাকায় প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষকে করোনামুক্ত করা সম্ভব। সংগঠনের দাবি, শুধু করোনার ভাইরাস মারা নয়, এই প্রোটোকল মানলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেকটা বাড়ানো সম্ভব।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হোমিওপ্যাথির প্রাক্তন অধ্যাপক ডা. অশোককুমার দাস বলেন, “বহু করোনা রোগী হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খেয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমাদের দাবি, রাজ্যে করোনা চিকিৎসার জন্য দ্রুত ২৪ ঘণ্টার হোমিওপ্যাথি হেল্পলাইন চালু করা হোক। রাজ্যের হোমিওপ্যাথি কলেজগুলিতে করোনা চিকিৎসার জন্য উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলা হোক।”
অশোকবাবু আরও বলেন, “অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসকরাও জিঙ্ক, ভিটামিনের মতো ওষুধ দিচ্ছেন। এসব ওষুধে করোনা সারে না, শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এপিটি প্রোটোকলও সেই একই কাজ করবে।”
গত বছর কেন্দ্রের আয়ুশ মন্ত্রক এবং সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ হোমিওপ্যাথির যৌথ উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে পরীক্ষামূলকভাবে আর্সেনিকাম অ্যালবাম থার্টি প্রয়োগ করা হয়েছিল। গুজরাট, কেরল, মহারাষ্ট্র সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য তখন জানিয়েছিল, আর্সেনিকাম অ্যালবাম থার্টি প্রয়োগ করে খুব ভালো ফল মিলেছে। যাঁরা এই হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ৯৯.৬৯ শতাংশের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
১৮ বছরের কম বয়সিদের টিকাকরণ শুরু হতে এখনও অনেক দেরি। এছাড়া অন্তঃসত্ত্বা বা শিশুকে মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানো মায়েদের করোনার টিকায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাঁদের পক্ষে এই তিনটি অত্যন্ত ওষুধ অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে বলে জানাচ্ছেন হোমিও চিকিৎসকরা।