(CRIME REPORTER: – এই পর্বে শোনানো হবে নানান অপরাধ কাহিনী। বিভিন্ন রহস্যজনক ঘটনার নেপথ্য কাহিনী। বিখ্যাত গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর তদন্তের রোমহর্ষক গল্প। বিভিন্ন দেশের গুপ্তচর সংস্থাগুলোর গোপনে খবর সংগ্রহের গল্প আড্ডার মত করে উঠে আসবে বিশিষ্ট সাংবাদিক হীরক কর -এর কলমে।)
হীরক কর : আপনারা জানেন, পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন গুপ্তচর সংস্থা গোপনে কাজ করে। যেমন ভারতের “র”, আমেরিকার “সিআইএ”, ইজরায়েলের “মোসাদ”, রাশিয়ার “কেজিবি”, ব্রিটেনের “এম আই সিক্স”, পাকিস্তানের “আইএসআই”। এগুলো সেইসব গুপ্তচর সংস্থা যাদের আমরা জানি। তাদের নানা কাহিনী পড়ি, মাল্টিপ্লেক্সের পর্দায় দেখি। এদের সাফল্য এবং ব্যর্থতার কাহিনী সবসময়ই আমাদের আকর্ষণ করে।
পৃথিবীজুড়ে নিজের নিজের দেশের হয়ে কাজ করে থাকে এরা। নিজের দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে এরা অন্য দেশে গিয়ে তাদের মিশন বা অপারেশনকে সাফল্যমন্ডিত করে তোলে। কিন্তু আপনি কি জানেন পৃথিবীতে এমন একটা গুপ্তচর এজেন্সি বা গুপ্ত সংগঠন আছে, যার গতি বিধি সত্যি সত্যিই অত্যন্ত গোপনীয়। এই গল্প রীতিমতো রোমহর্ষক। কিন্তু এর সম্পর্কে খুব একটা কিছু জানেন না।
বলা হয়, বিশ্বের ৫০ শতাংশ ধনী মানুষ এই গোপন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। এই তালিকায় বহু নামকরা লোকের নাম শোনা যায়। কিন্তু যিনি যুক্ত থাকেন, তিনি কখনোই স্বীকার করেন না যে, তিনি এই গোপন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। কেন? শর্ত হলো, এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তিনি যদি গোপনীয়তা ভেঙে দেন তাহলে তার মৃত্যু অবধারিত। কাউকে যদি কিছু বলেন, তাহলে আপনার মৃত্যু নিশ্চিত।
এই সংগঠনের ব্যাপারে বলা হয়,বিশ্বজুড়ে এমন কিছু ঘটনা ঘটে, যার কোনো ব্যাখ্যা মেলে না। গভীর ভাবে তদন্ত করলেও আম জনতার সামনে কিছুই আসে না। কখনোই জানা যায় না, কে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। কেন ঘটিয়েছে ? তাই মনে করা হয় এইসব ঘটনার পেছনে এই গুপ্তচর সংস্থটির হাত আছে। যার কোন প্রমাণ মেলে না। বহু মানুষ আছেন যারা এই সংগঠনটি সম্পর্কে জানেন না। এই সংগঠনটির নাম “ইলুমিনাতি”।
গুগল সার্চ, বা সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সংস্থা সম্পর্কে আপনি তেমন কিছুই খুঁজে পাবেন না। কিন্তু “ইলুমিনাতি” বলে যে গুপ্তচর সংগঠনটি আছে, তাদের সদস্যরা বিভিন্ন দেশে এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। গোপনে মিটিং করেন। এমন ভাবে কাজ করে, যা একটা গোপন গুপ্তচর সংস্থার করার কথা। বিশ্বজুড়ে প্রচুর ষড়যন্ত্র, যুদ্ধের বিষয় গোপন ভূমিকা, বড় বড় লোকদের খুন, ইলুমিনাতির কাজ। কিন্তু কোনোদিন কোনও সাক্ষ্য প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু ইলুমিনাতি কি ? কেন তাকে এত বড় গুপ্তচর সংগঠন বলা হয় ? এত গোপনীয়তা কেন ? “র,’ “আইএসআই”, “কেজিবি”, “এমআইসিক্স”, সম্পর্কে মোটামুটি সবাই জানে। এমনকি তাদের চিফ কে, সেটাও জানা যায়। তবে হ্যাঁ, এই গুপ্তচর সংগঠনগুলোর গোপন অপারেশন সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না। যখন তারা অপারেশন করে, তাদের কাজের ধরন পুরোটাই গোপন থাকে।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এখনো বিশ্বাস করে আজও “ইলুমিনাতি” কাজ করে। এর সঙ্গে বড় বড় লোক যুক্ত। ইলুমিনাতি কি ? এর সদস্য কারা ? এর সূচনা কবে হয়েছিল ? সূচনা হওয়ার পেছনের কারণই বা কি ?
ঘটনার শুরু বলা চলে জার্মানির দক্ষিণপূর্বের রাজ্য ব্যাভারিয়াতে। ব্যাভারিয়া আবার জার্মানির বৃহত্তম রাজ্য । যার রাজধানী মিউনিখ। সেখানে একটা জায়গা আছে ইঙ্গলস্ট্যাড। ছোট্ট একটা শহর। এই ইঙ্গলস্ট্যাডে ইলুমিনাতির জন্ম হয়। বাভারিয়াতেই ইলুমিনাতির নাম প্রথম শোনা যায়। এটা ১৭৭৬-এর কথা। এটি প্রতিষ্ঠা করেন খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষিত অ্যাডাম ওয়েইশপ্ট, যিনি ছিলেন ইঙ্গলস্ট্যাড বিশ্ববিদ্যালয় এর “ক্যাথলিক গির্জা আইন” বিভাগের প্রথম (কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নন) অধ্যাপক। সংগঠনটির সর্বপ্রথম সদস্য ছিলেন ওয়েইশপ্ট এবং তাঁর ৪ জন ছাত্র। “আউল অব মিনার্ভা” ছিলো তাদের প্রতীক। অর্থাৎ সংগঠনের প্রতীক হলো গ্রিক জ্ঞানদেবী মিনারভার পেঁচা।
ইলুমিনাতি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করা এবং জনজীবনে ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় প্রভাব কমানো। কিছু নিয়ম বা নীতিমালা প্রণয়ন করা, যা পৃথিবীর সবাই মেনে চলবে। ইলুমিনাতির গঠন, তার পরিকাঠামো, বুনিয়াদ, লক্ষ্য, চিন্তাভাবনা, সবকিছুই এই প্রফেসরের মস্তিষ্ক প্রসূত। সমকামিতা, অবাধ যৌনাচার, পরকীয়া, আত্মহত্যাকে বৈধতা প্রদান এবং এমন ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা চালু করা, যেখানে অতিরিক্ত মাত্রায় সুদ সব মানুষকে সচ্ছল করবে। এটাই ইলুমিনাতির মূল লক্ষ্য।
অ্যাডাম ওয়েইশপ্ট যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতেন, তখনই ইলুমিনাতি গঠন করেন। নাম রাখেন “অর্ডার অফ ইলুমিনাতি”। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ ছাত্রকে নিয়ে তিনি এই ইলুমিনাতি গঠন করেন। এর প্রথম বৈঠক এই প্রফেসরের বাড়িতেই হয়। ১ মে ১৭৭৬-এ প্রথম বৈঠক হয়। এবং ইলুমিনাতির জন্ম হয়। অ্যাডাম সদস্যদের জন্য ছদ্মনামের ব্যবস্থা করেন । অ্যাডামের নিজের নাম হলো স্পার্টাকাস। ১৭৭৮ সালের এপ্রিল মাসে সংঘের নাম সরকারি ভাবে হলো ইলুমিনাতি। যার অর্থ “যারা কোনো বিষয়ে বিশেষ ভাবে আলোকিত বা জ্ঞানার্জনের দাবি করে”। সে সময় সংঘের সদস্য ছিল ১২। গ্রীষ্ম যেতে না যেতেই সদস্য সংখ্যা দাঁড়াল ২৭-এ। কারা হত সদস্য? জেনে অবাক হবেন, সচ্চরিত্র খ্রিস্টান ছিল তাদের কাম্য এবং সকল প্রকার ইহুদী। আর মূর্তি পূজা ছিল নিষিদ্ধ এই সংগঠনে। এমনকি নারী, ধর্মগুরু এবং অন্য সিক্রেট সোসাইটির সদস্যরাও নিষিদ্ধ ছিল। স্বাগত জানানো হত ধনী, শিক্ষানবিশ, আর ১৮-৩০ বছরের তরুণদের।
একটু একটু করে তিন হাজার লোক ইলুমিনাতির সঙ্গে যুক্ত হয়। তাঁরা শপথ নেন, এই সংগঠনটির ব্যাপারে তাঁরা কোথাও কোনও আলোচনা করবেন না। বিশ্বের কাউকে তাঁরা এ ব্যাপারে কিছু বলবেন না। সমস্তটা গোপন থাকবে । কিন্তু প্রশ্ন হল, প্রফেসর এই সংগঠনটা গঠন করলেন কেন ? এর পিছনে যে কাহিনী ? যা জানা যায়, তা হল, তদানীন্তন সময়ে ধর্মীয় কট্টরবাদ খুব বেশি পরিমাণে ছিল। মানুষের নিজের ইচ্ছা মত জীবনযাপন করার স্বাধীনতা কম ছিল। সরকারের হাতে ছিল প্রভূত ক্ষমতা। চার্চ এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের বক্তব্যের অত্যাধিক গুরুত্ব ছিল। মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না। এইগুলো সামনে রেখেই প্রফেসর ঠিক করেন মানুষকে চার্চ এবং কট্টরবাদের ঘেরাটোপ থেকে বের করে আনতে হবে। একটা উন্মুক্ত বিশ্ব তখনই হবে, যখন মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। মানে কায়দা করে ধর্মীয় পরাধীনতা থেকে বেরিয়ে এসে এক নতুন বিশ্ব তৈরি করার চিন্তা ভাবনা ছিল এই ইলুমিনাতি। যেখানে সবাই সমান। কারো মধ্যেই যেন ভেদাভেদির প্রশ্ন না থাকে।
তত্ত্ব মতে, শক্তিমান সিক্রেট সোসাইটি ইলুমিনাতি মূলত এ বিশ্বের সকল প্রধান ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করে।নেপোলিয়নের ওয়াটারলু যুদ্ধের ফলাফল নির্ধারণ করে ইলুমিনাতি।
কিন্তু দুটো তথ্য ইলুমিনাতির গোপনতা ভেঙে দেয়। ওই সময় শুধু জার্মানি নয়, গোটা পৃথিবী জুড়ে এবরশন অর্থাৎ গর্ভপাত বেআইনি ছিল। কিন্তু ইলুমিনাতি গর্ভপাতের পক্ষে ছিল। সব দেশ মনে করে, আত্মহত্যা করা বা করার চেষ্টা বেআইনি। কেননা জীবন অমূল্য। কিন্তু ইলুমিনাতি বলে, যারা জীবন-যাপনে খুশি নয়, নানাভাবে জীবনযন্ত্রণায় জর্জরিত, তারা আত্মহত্যা করলে সেটা অপরাধ নয়।মনে হবে যেন ইলুমিনাতি আত্মহত্যা করতে উৎসাহিত করছে।
সমস্ত গোপনীয়তা রাখা সত্ত্বেও এই দুটো জিনিস বাইরে আসায় প্রফেসর এবং তার সঙ্গী সাথীদের ব্যাপারে জার্মান সরকার জানতে পেরে যায়। জার্মান সরকার জানতে পারে ইলুমিনাতি চার্চ এবং সরকারের বিরোধিতা করছে । এটা সরকারের কাছে ভয়ানক মনে হয়। ধীরে ধীরে বহু মানুষ ইলুমিনাতির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। যা সরকারের পক্ষে বিপদজনক। ব্যাভারিয়ার শাসক চার্লস থিওডোর ভয় পেয়ে গেলেন। তার সরকার সব গুপ্ত সংঘ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল। এই ব্যান এলো ১৭৮৫ সালের ২ মার্চ।
অ্যাডাম পালিয়ে গেলেন আর ইলুমিনাতির প্রচুর নথিপত্র সরকারের হাতে এসে গেল এবং দু’বছর বাদে সরকার সেটা প্রকাশও করে দেয় । তৎক্ষণাৎ প্রফেসরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। প্রফেসর কয়েকদিন চুপচাপ বসে থাকার পর আবার নতুন করে কাজ করতে শুরু করেন। ইলুমিনাতির জন্য লোকদের একত্রিত করতে থাকেন। জানতে পেরে জার্মান পুলিশ তদন্ত শুরু করে। শুধু তদন্তই নয়,আগেই ইলুমিনাতিকে ব্যান করে দেওয়া হয়। বলা হয়, যে ব্যক্তি এই গোপন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হবে, সরকার জানতে পারলে তাঁকে মৃত্যুদন্ড দেবে। এবার প্রফেসরকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে আরও একটা শহর গোথাতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রফেসর একটা বই লেখেন। যেখানে ইলুমিনাতির ব্যাপারে বিস্তারিত পাওয়া যায়। কেন ইলুমিনাতি গঠিত হলো, তার লক্ষ্যই বা কি ছিল সবটাই জানা যায়। ওই বইটি এখনো জার্মানির এক মিউজিয়ামে আছে। এরপর যে ইলুমিনাতির কী হলো ইতিহাস আমাদের তা নিশ্চিত করে বলে না।
তবে জানা যায়, প্রফেসার এরপর খুব সাত্বিক জীবনযাপন করতে থাকেন। নিজেকে সবকিছু থেকে গুটিয়ে নেন। কথাবার্তা কম বলেন। চুপচাপ থাকেন। কিন্তু গোপনে গোপনে ইলুমিনাতির কাজ চালিয়ে যান। ইলুমিনাতি ব্যান করার পরেও তাদের সদস্য সংখ্যা বাড়তে থাকে। জার্মানি পেরিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, আমেরিকা হয়ে গ্রেট ব্রিটেন সহ বিভিন্ন দেশে ইলুমিনাতির সদস্য সংখ্যা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ফ্রান্সে যে বিপ্লব হয়েছিল, বলা হয় তার পিছনে ইলুমিনাতির হাত ছিল। সমস্ত পরিকল্পনা ছিল ইলুমিনাতির। অভিযোগ, আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির খুন, ইলুমিনাতির কাজ। কেনেডি খুন হন ২৭ নভেম্বর ১৯৬৩ -তে। আর কেনেডির খুন আজও রহস্য। বলা হয়, পৃথিবীতে কোন রহস্যের সমাধান যদি না হয়, তাহলে বুঝতে হবে এর পেছনে ইলুমিনাতির হাত আছে। আমেরিকানদের অনেকের মতে, প্রেসিডেন্ট কেনেডির গুপ্তহত্যা আসলে ইলুমিনাতিই করিয়েছে, কারণ তিনি বাধা দিচ্ছিলেন তাদের কাজে।
জন এফ কেনেডির খুনের পিছনে ইলুমিনাতির হাত আছে বলে উপযুক্ত প্রমাণ মিলেছে। যখন কেনেডি খুন হন তার আশেপাশে একজন মহিলাকে দেখা গিয়েছিল। ওই মহিলাকে তার আগে কেউ কখনও দেখেননি। উনি কেনেডির খুব কাছেই ছিলেন। ওর কাছে ক্যামেরার মত দেখতে একটা পিস্তল ছিল। ওটা থেকেই গুলি চলে। পরে ওই মহিলার নাম দেয়া হয় “দ্যা বাবুস্কা লেডি” । যিনি কেনেডির খুনের সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন। এবং পরে গায়েব হয়ে যান। ওই মহিলাকে প্রত্যক্ষদর্শীরা দেখেছিলেন। কিন্তু ওই লেডি কে ছিলেন, সেটা আজও অজানা। বলা হয় এই লেডির সম্পর্ক গোপন সংগঠন ইলুমিনাতির সঙ্গে ছিল।
ইলুমিনাতির লক্ষ্য “নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার” ত্বরান্বিত করা। এই অর্ডারের মাধ্যমে সারা বিশ্ব থাকবে ইলুমিনাতির হাতের মুঠোয়। ১৯৯১ সালে নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডারের কথা প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সিনিয়র তার ভাষণে উল্লেখ করবার পর এই তত্ত্ব তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। অনেকেই মনে করেন, হলিউডের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ইলুমিনাতির দখলে। ধারণা করা হয়, আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বুশ, জর্জ বুশ, বারাক ওবামা, ডোনাল ট্রাম্প সহ অনেকেই ইলুমিনাতির সাহায্যে ক্ষমতায় এসেছেন।
পৃথিবীতে করোনাভাইরাস প্রথম আসার পর আঙুল উঠেছিল চিনের দিকে। বলা হয় আমেরিকাকে দমন করতে চিন ইচ্ছা করে এই করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। প্রথমে আমেরিকায়, তারপর পৃথিবী জুড়ে। আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি অভিযোগ ছুড়ে দিয়েছিলেন চিনের দিকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো প্রমাণ মেলেনি। তাই অনেকেরই সন্দেহ রয়েছে এই ইলুমিনাতির দিকে। এমনকি আমেরিকায় যখন নাইন/ইলেভেন হয়, তখন বহু লোক আঙুল তুলেছিলেন ইলুমিনাতির দিকে। কেননা ইলুমিনাতি পৃথিবী জুড়ে শাসন করতে চায়। ধর্মের বেড়ি কাটতে চায়। সাম্যবাদের কথা বলে। মানুষের ইচ্ছা মত জীবন যাপনের সুবিধা দিতে চায়। এইসব কারণে পৃথিবীর ধনী মানুষেরা কোনো না কোনও ভাবে ইলুমিনাতি সঙ্গে যুক্ত। ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ। তাতে একসময় মাইকেল জ্যাকসনের নামও এসেছিল। উনি মঞ্চে এক ধরনের ত্রিকোণ তৈরি করতেন।
নেতা-নেত্রী, অভিনেতা অভিনেত্রী, অনেক ধনী মানুষকে দেখা যায় এমন কি ত্রিকোণ তৈরি করতে। তাই প্রশ্ন হল এই ত্রিকোণ কি ইলুমিনাতি চিহ্ন ? মাইকেল জ্যাকসনের মৃত্যু হয়েছিল তাতেও সন্দেহ রয়েছে, এর পিছনে ইলুমিনাতির হাত আছে। কিন্তু প্রমাণ কিছুই হয়নি। বলা হয় ইলুমিনাতির সদস্য একে অপরকে কিভাবে চিনবেন তা বোঝার জন্যই এই ত্রিকোণ। একদম ঠিক বলতে গেলে, এই ত্রিকোণ ইলুমিনাতির চিহ্ন। গোপন কোড। যা প্রফেসরের বাড়ির বাইরে লাগানো আছে। চার্চ এবং ক্যাথলিক, পোপ এবং সরকারের একত্রিত বিরোধিতা করতেই ইলুমিনাতির জন্ম হয়েছিল। বলা হয়, ইলুমিনাতির সদস্য, বারাক ওবামা, পোপ, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, জর্জ ডব্লিউ বুশ, কানিয়ে ওয়েস্ট, বব ডিলান, রিহান্না, বিয়ন্সে, লেডি গাগা, জিম ক্যারি, ম্যাডোনা প্রমুখ।
১৭৭৬ থেকে ২০২০, এই দীর্ঘ সময়ে ইলুমিনাতি সম্পর্কে কোনও তথ্য খুব একটা কারো কাছে নেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন ‘র’, ‘সিআইএ’ , ‘আইএসআই’, ইলুমিনাতির সামনে কিছুই নয় । আড়াইশো বছর ধরে এটা এমনভাবে গোপনীয়তা রক্ষা করে চলেছে যে, আজ ২০২০ সালে এর সদর দফতর কোথায় ? এর প্রধান কে ? সদস্য কারা কারা ? তারা কোন কোন দেশের ? কেউ জানে না। সবটাই রহস্য।
নতুন করে বর্তমান সময়ে ইলুমিনাতি আবার আলোচিত হতে শুরু করেছে ড্যান ব্রাউনের “অ্যাঞ্জেলস অ্যান্ড ডিমনস” উপন্যাসের মাধ্যমে। কেউ কেউ মনে করে থাকেন ইলুমিনাতি সদস্যরা পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করে। তবে তার কোনো বাস্তব প্রমাণ নেই।