হোমঅফবিটMango : এক কেজি আমের দাম পৌনে ৩ লক্ষ, মিলবে এই ভারতেই

Mango : এক কেজি আমের দাম পৌনে ৩ লক্ষ, মিলবে এই ভারতেই

Mango : এক কেজি আমের দাম পৌনে ৩ লক্ষ, মিলবে এই ভারতেই

মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরের এক দম্পতি রানি ও সংকল্প পরিহারের বাড়ির বাগানে দুটি আম গাছকে পাহারা দিচ্ছেন চার জন সশস্ত্র রক্ষী। আর রয়েছে ৬টি কুকুর। গাছ দুটি জাপানি মিয়াজাকি (Miyazaki) প্রজাতির। এক কেজি মিয়াজাকির দাম পড়তে পারে তিন লাখ টাকা। প্রতিটি আমের ওজন ৩৫০ গ্রামের মতো।

এক কিলো মিয়াজাকির দাম যদি ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা হয়, এ হেন আমগাছের তো রক্ষী থাকবেই। বিশেষত যখন বাড়িতে ঘন ঘন খদ্দের হানা দিচ্ছে। মালিক অবশ্য স্থির করেছেন আমের বীজ থেকে আরও অনেক চারা করবেন।

আম বিশেষজ্ঞদের মতে, জাপানি মিয়াজাকিই হল বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম। পরিহার দম্পতি চেন্নাই গিয়েছিলেন বাগানের জন্যে চারা কিনতে। পথে ট্রেনে এক ব্যক্তি এই চারা দুটি দিয়ে সন্তান স্নেহে লালন করতে বলেছিলেন। গাছে ফল এলে তার রং দেখে তাঁরা তাজ্জব হয়ে যান। বুঝতে পারেন, এটি বিরল প্রজাতির আম।

মায়ের নামে আমটির নাম রাখা হয় ‘দামিনী’। যতদিনে তাঁরা আমের প্রকৃত পরিচয় জানতে পারেন, ততদিনে ফল কিনতে চেয়ে ও গাছের ভাড়া চেয়ে লোকের ভিড় জমা শুরু হয়ে গেছে। ফল চুরির চেষ্টাও হয়েছে বহুবার। অনেকে তো যে কোনও মূল্যে একটি আম কিনতে চেয়েছিলেন।

মধ্যপ্রদেশের কৃষি দপ্তরের প্রাক্তন অধিকর্তা জি এস কৌশলের মতে, এর আগে আফগানিস্তানের এম নূরজাহান একই ভাবে সংবাদ শিরোনামে এসেছিল। তবে শুধুমাত্র দামের জন্য, স্বাদ গুণ বা গন্ধের কারণে নয়।

একটি নূরজাহানের দাম ছিল 500 থেকে 1000-এর মধ্যে। মিয়াজাকি অবশ্য নূরজাহানকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে। মিয়াজাকি আদৌ সংকর প্রজাতির কিনা, তা খতিয়ে দেখছে জহরলাল নেহরু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে গবেষণার ফল জানালে, তবেই ভারতে এই আমের চাষ শুরু হবে।

এক দল বিশেষজ্ঞের মতে, মিয়াজাকির অনুকূল আবহাওয়া ভারতে আছে। ফিলিপিন্স, তাইল্যান্ডেও এই আমের চাষ হয়। তাঁরা এও বলেছেন যে, মিয়াজাকি অন্যান্য প্রজাতির তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি মিষ্টি ও অনেক বেশি antioxidant বহন করে। এতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন ও ফলিক অ্যাসিড, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় এবং কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস হল এই আমের মরসুম।একটি আমের সর্ব নিম্ন মূল্য ৮৬০০০ টাকা। গত বছর আন্তর্জাতিক বাজারে একট কেজি মিয়াজাকির সর্বোচ্চ মূল্য ছিল ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা।

উজ্জ্বল লালের উপর হাল্কা বেগুনি রঙের ছোঁয়া থাকে এই দুর্মূল্য আমের গায়ে। সেই কারণে এর সঙ্গে মূল্যবান পাথর চুনির তুলনা করা হয়। আমটিকে জাপানে মহার্ঘ উপহার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আকারে দেখতে এক হওয়ায় অনেকেই ডিম ভেবে ভুল করতে পারেন। তাই জাপানে এর একটা ডাক নাম “তাইও-নো-তোমাগো” যার অর্থ সূর্য কিরণের ডিম।

গত শতাব্দীতে সত্তরের দশকের মাঝামাঝি এই আমের চাষ জাপানে শুরু হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশের ঢাকা তে এক ব্যবসায়ী এই আম তাঁর ছাদে ফলিয়েছেন। মধ্যপ্রদেশের পরিহার দম্পতির দৌলতে দুর্লভ প্রজাতির এই আমের খোঁজ মিলল ভারতেও।

spot_img
spot_img

সবাই যা পড়ছেন

spot_img