সঞ্জয় বসাক
জগন্নাথ পুরীর (Puri Jagannath Temple) আরেক নাম হল ‘শ্রীক্ষেত্র’। শ্রী শব্দের অর্থ শ্রীদেবী বা লক্ষ্মীদেবী, যিনি ভগবান শ্রীবিষ্ণুর স্বরূপশক্তি। যে ভূমি খন্ড শ্রীশক্তির প্রভাবান্বিত, সেই ক্ষেত্র শ্রীক্ষেত্র নামে প্রসিদ্ধ।
বর্গী হনুমান
জগন্নাথ মন্দিরের পশ্চিম দিকে লোকনাথ রোডে বর্গী হনুমান মন্দির অবস্থিত। এক সময় বর্গীরা (মহারাষ্ট্রের এক জনজাতি) এই পথ দিয়ে ঘোড়ায় চড়ে যেত। এর ফলে শ্রীমন্দিরে ও পুরীর মানুষদের মধ্যে বিঘ্ন সৃষ্টি হত। এই বর্গীরা হনুমানের ভক্ত। তাই তাদের পুরী প্রবেশ বন্ধ করতে এই অঞ্চলে একটি হনুমান মূর্তি মন্দিরে স্থাপন করা হয়। বর্গীরা হনুমান মূর্তি অতিক্রম করে যেতে অনিচ্ছুক ছিল। এইভাবে মহারাষ্ট্রের দুর্ধর্ষ বর্গীদের আক্রমণ থেকে পুরী রক্ষা পেয়েছিল।
দরিয়া বা বেড়ি হনুমান
পুরী ধামে চক্রতীর্থের কাছে বেড়ি হনুমান মন্দির অবস্থিত। এখানে হনুমানের মূর্তি একটি বেড়ি দিয়ে আবদ্ধ করা হয়েছে। শ্রীজগন্নাথদেব হনুমানকে পুরীধাম রক্ষায় নিয়োজিত করেন। কেননা কখনও কখনও সমুদ্রের ঢেউ পুরীতে প্রবেশ করত এবং পুরীবাসীকে ভুগতে হত। সেজন্য জগন্নাথদেব এখানে পাহারায় হনুমানকে নিযুক্ত করেন, যাতে সমুদ্র পুরী শহরে প্রবেশ করতে না পারে।
একবার হনুমানের অযোধ্যা পরিদর্শনের জন্য ইচ্ছা হল। সুতরাং পুরীধাম পাহারার দায়িত্ব ফেলে ঐ স্থান ত্যাগ করে হনুমান অযোধ্যা গেলেন। ফলে সমুদ্রের জল শহরে প্রবেশ করল এবং শহরবাসীর খুব ভোগান্তি হতে লাগল। শ্রীজগন্নাথদেব হনুমানকে অযোধ্যা থেকে ফিরিয়ে আনলেন। তাঁকে এখানে বেড়ি দিয়ে আবদ্ধ করে রাখলেন এবং তাঁকে আজ্ঞা দিলেন যে, কখনও যেন সে এই স্থান ছেড়ে না যায় এবং দায়িত্ব সুন্দরভাবে পালন করে।
যেহেতু হনুমান পুরী ধামকে মহাসাগর থেকে সুরক্ষিত রাখতে দরিয়ার (মহাসাগর) নিকটে অবস্থান করছে, সেজন্য তিনি দরিয়া হনুমান নামেও খ্যাত।
সঞ্জয় বসাক, জগন্নাথ ভক্ত।